মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষা, স্কলারশিপের সুবর্ণ সুযোগ
এশিয়ার ইউরোপ খ্যাত দেশ মালয়েশিয়া এখন উচ্চশিক্ষায় এশিয়ার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। প্রথম স্থানে থাকা দেশ চীনের সাথে পাল্লা দিয়ে শিক্ষাখাতে অভাবনীয় বিপ্লব সাধন করে চলেছে মাহাথির মুহাম্মদের দেশ মালয়েশিয়া। দেশটির বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষাকে সহজ করতে স্কলারশিপও দিচ্ছে।
এর মধ্যে ওয়ার্ল্ড র্যাঙ্কিং এ থাকা UCSI ইউনিভার্সিটি, Limkok Wing, MAHSA ইউনিভার্সিটিসহ বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন প্রোগ্রামভেদে ৩০% থেকে ৬০% পর্যন্ত স্কলারশিপ দিচ্ছে দেশটি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর মতো বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। মেডিকেল, ডেন্টাল, নার্সিং এবং ইঞ্জিনিয়ারিংসহ শতাধিক বিষয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা এসে অধ্যয়ন করছে এসব প্রতিষ্ঠানে।
এছাড়া বিশ্বের আধুনিক দেশগুলোর তুলনায় মালয়েশিয়ায় থাকা-খাওয়ার খরচ তুলনামূলক কম হওয়ায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বাড়তি আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু এখন মালয়েশিয়া।
সম্প্রতি দ্যা গার্ডিয়ান প্রকাশিত এক জরিপে উঠে এসেছে, এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে গত তিন বছরে সবচেয়ে বেশি স্টুডেন্ট ভিসা দেওয়ার তালিকায় শীর্ষস্থানে রয়েছে মালয়েশিয়া। এ তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে চীন।
শিক্ষা বিশ্লেষকদের মতে উচ্চশিক্ষায় আধুনিকায়ন ও ভিসা প্রাপ্তির সহজায়ন মালয়েশিয়াকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে। এদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে ইউরোপ-আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আন্তঃযোগাযোগ ভালো হওয়ায় যতো সহজে শিক্ষার্থীরা ক্রেডিট ট্রান্সফারের সুযোগ পাচ্ছে তা বিশ্বের অন্য কোথাও নেই।
মালয়েশিয়ায় অধ্যয়নরত একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা বিশ্ব শিক্ষাব্যবস্থা ও আবেদনের পদ্ধতি সম্পর্কে সচেতন না থাকায় তাদের বাইরের দেশে পড়াশোনার নানাবিধ সুযোগ হাতছাড়া হয়ে থাকে। অথচ দেশের প্রচুর এজেন্সি এ বিষয়ে বেশ ভালো সুযোগ করে দিচ্ছে। একটু সচেতন হলে শিক্ষার্থীরা সেসব সুযোগ কাজে লাগিয়ে উন্নত ও আধুনিক শিক্ষায় বহির্বিশ্বে নিজেকে উপস্থাপন করতে পারে।
স্কলারশিপের ব্যাপারে মালয়েশিয়ার একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাডমিশন ডেস্কে কথা বলে জানা গেছে, প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট সাবজেক্ট চয়েজ করে সেটার ফি সম্মন্ধে জেনে তারপর সেখানে শিক্ষার্থী নিজেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাবমিট করে আবেদন সম্পন্ন করতে পারে। আবেদন একসেপ্ট হলে শিক্ষার্থীর মেইলে ভার্সিটি থেকে অফার লেটার পাঠানো হয়। সেই অফার লেটার পাবার পর তাতে উল্লেখিত এ্যাকাউন্টে ভিসা ফি জমা দিলেই কিছুদিনের মধ্যে ভিসা পেয়ে যায়। আর এসব কিছু নিজে করতে না চাইলে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচিত কোন শিক্ষার্থীদের মাধ্যমেও সকল কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে পারে।
তবে এক্ষেত্রে দেশের স্বীকৃত এজেন্সিগুলোর মাধ্যমেও আবেদন করা যেতে পারে। সবচেয়ে সহজ হচ্ছে একটু খোঁজ নিয়ে পরিচিত শিক্ষার্থী আছে কিনা তা বের করে তার মাধ্যমেই অফিসিয়াল সব কাজ সমাধান করতে হেল্প চাওয়া। এটা সবচেয়ে সুবিধাজনক ও নিরাপদ বলেছেন সংশ্লিষ্টরা।
এছাড়াও বর্তমানে মালয়েশিয়ায় অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের দ্বারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচালিত হচ্ছে বিভিন্ন শিক্ষা বিষয়ক গ্রুপ ও ফ্যান পেজ। এর মধ্যে মাসা ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের একটি পেইজ হচ্ছে, https://www.facebook.com/StudyMUBS/। এসব গ্রুপ বা পেজে থেকেও শিক্ষার্থীরা পেতে পারে স্কলারশিপ সহ আবেদনের যাবতীয় তথ্যাদি।