আইইএলটিএস ছাড়াই স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি করুন জাপানে, লাগবে না টিউশন ফি
পড়ালেখা ও গবেষণার জন্য বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের কাছে সূর্যোদয়ের দেশ জাপান বেশ এগিয়ে। জাপানের মানুষ শান্তি প্রিয়। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে প্রতিবছর অনেক শিক্ষার্থী জাপানে পড়ালেখা ও গবেষণার জন্য যেয়ে থাকেন। দেশটিও বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন স্কলারশিপ দেয়। এর একটি হলো মেক্সট স্কলারশিপ। এ স্কলারশিপের মাধ্যমে টিউশন ফি ছাড়াই জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি করতে পারবেন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা।
স্নাতকোত্তরের সময়সীমা দুই বছর ও পিএইচডির জন্য তিন বছর। আবেদন বা ভর্তি হতেও কোনো ফি লাগে না। মাসিক উপবৃত্তি, বিমানে যাতায়াত খরচসহ নানা সুযোগ-সুবিধা মেলে এ স্কলারশিপ পেলে আইইএলটিএস কিংবা টোয়েফল ছাড়াই করা যায় আবেদন।
তবে এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার মাধ্যম ইংরেজি হতে হবে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা এ স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের শেষ সময় ৫ মে ২০২৪ বিকাল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত।
মেক্সট স্কলারশিপ কি?
জাপানে পড়াশোনার জন্য অন্যতম একটি স্কলারশিপ হলো ‘মেক্সট’ (এমইএক্সটি)। শব্দটি প্রকৃতপক্ষে মিনিস্ট্রি অব এডুকেশন, কালচার, স্পোর্টস, সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমইসিএসএসটি)। বড়সড় শব্দটির সংক্ষিপ্ত রূপ হলো মেক্সট। ১৯৫৪ সাল থেকে শুরু করে বিশ্বের ১৬০টির মতো দেশ থেকে আসা ছাত্রদের জন্য এ স্কলারশিপ দেয় জাপান সরকার। জাপান সরকার প্রদত্ত স্কলারশিপগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে খ্যাতনামা আর সবচেয়ে সম্মানিত। এ স্কলারশিপের জন্য ভিসা পেলে ভিসায় লেখা থাকে ‘গভট. স্কলার’। জাপানের গবেষণার মাধ্যমে স্কলারশিপ প্রাপ্তির দেশ এবং জাপানের মধ্যে বন্ধুত্বের সেতু হয়ে ওঠা মানবসম্পদকে উৎসাহিত করা এবং উভয় দেশ ও বৃহত্তর বিশ্বের উন্নয়নে অবদান রাখার লক্ষ্যেই দেওয়া হয় এ স্কলারশিপ।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এ-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গবেষণা পর্যায়ে (মাস্টার্স ও পিএইচডি) ৩০ জন, আন্ডারগ্র্যাজুয়েট পর্যায়ে ২৫ জন, কলেজ অব টেকনোলজি প্রোগ্রামের জন্য ১৫ জন এবং স্পেশালাইজড ট্রেনিং কলেজের জন্য ৫ জনকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হবে। নির্বাচিতদের জাপান দূতাবাসে অনুষ্ঠেয় লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের জন্য কিছু শর্তের কথা উল্লেখ আছে।
বৃত্তিপ্রাপ্তদের নিজ নিজ দেশ থেকে জাপানে আসার জন্য ও ঠিক সময়ে ডিগ্রি শেষে দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য বিমানভাড়া মেক্সট বহন করে থাকে। অন্য অনেক বৃত্তিতেই এ সুবিধা সচরাচর থাকে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো রকম টিউশন ফি, পরীক্ষার ফি বা অন্যান্য কোনো ফি দিতে হয় না। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর যাবতীয় ফি মওকুফ এবং পাবলিক বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি ও অন্যান্য ব্যয়ভার বহন করে দেশটি।
যেসব বিষয় নিয়ে পড়া যাবে
গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, আর্থ সায়েন্স, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, সিস্টেম অ্যান্ড কন্ট্রোল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইকোনমিকস, ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, কেমিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, গণিত ও কম্পিউটিং সায়েন্স, লাইফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি।
সুযোগ-সুবিধাসমূহ
* বৃত্তিপ্রাপ্তদের কোনো টিউশন ফি বা ভর্তি ফি দেওয়া লাগবে না।
* আবেদন করতেও লাগবে না কোনো ফি।
* আসা-যাওয়ার বিমান খরচও মিলবে।
* শিক্ষার্থীদের আইইএলটিএস বা টোয়েফল স্কোর দেখাতে হবে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা ও পরীক্ষা হয়েছে, সেটির প্রমাণ লাগবে।
আরও পড়ুন: শিক্ষাসফরে আমেরিকায় যাওয়ার সুযোগ, মিলবে সাড়ে ৫ লাখ টাকা
যোগ্যতাসমূহ
* বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
* ১৯৯০ সালের ২ এপ্রিলের পর জন্মগ্রহণকারীরা আবেদনের যোগ্য।
* জাপানি সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার আগ্রহ থাকতে হবে।
* স্নাতকোত্তরের জন্য স্নাতক এবং পিএইচডির জন্য স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারী হতে হবে।
* একাডেমিক ফলাফল ভালো হতে হবে।
প্রাথমিকভাবে মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। এরপর অনুষ্ঠিত হবে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় মূলত ইংরেজি ভাষার ওপর দক্ষতা যাচাই করা হবে। মাস্টার্স বা পিএইচডিতে আবেদনের জন্য মেক্সটের নিজস্ব সিজিপিএর একটি মানদণ্ড থাকতে হয়। জাপানের সেশনগুলো দুটো সেমিস্টারে শুরু হয়। জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে মেক্সটের ওয়েবসাইটেও ‘মেক্সট’ বৃত্তির যাবতীয় তথ্য পাওয়া যায়।
আবেদনের প্রক্রিয়া
জাপানের মেক্সট স্কলারশিপে আবেদন করতে এবং বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন