পেশাজীবীদের জন্য হিউবার্ট এইচ হামফ্রে ফেলোশিপ, আবেদন শেষ ১ জুলাই
সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ অলাভজনক বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) পেশাজীবীদের জন্য জন্য আমেরিকার হিউবার্ট এইচ হামফ্রে ফেলোশিপ প্রোগ্রামের আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে। ফেলোশিপটি এক বছর মেয়াদি। বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের এ সরকারি ও বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত পেশাজীবীরা ফেলোশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের শেষ সময় ১ জুলাই ২০২৩।
তরুণ প্রজন্মকে দক্ষভাবে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্র সরকার প্রতিবছর প্রোগ্রামটির আয়োজন করে। এছাড়া ফুলব্রাইট প্রোগ্রামটি এক বছরের জন্য মিড-ক্যারিয়া পেশাজীবীদের নন-ডিগ্রি স্নাতক পর্যায়ে অধ্যয়ন, নেতৃত্বের বিকাশ এবং পেশাদার সহযোগিতার সুযোগ প্রদান করে।
১৯৭৮ সাল থেকে প্রয়াত সিনেটর ও উপরাষ্ট্রপতি হিউবার্ট এইচ হামফ্রের স্মৃতি ও অর্জনকে সম্মান জানাতে এই প্রোগ্রামটির আয়োজন করা হয়। প্রোগ্রামটি শুরু হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ থেকে ইতোমধ্যে প্রায় ১০০ জন বাংলাদেশি এই ফেলোশিপে অংশগ্রহণ করেছেন। এই ফেলোশিপের জন্য জনসেবায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সরকারি কিংবা বেসরকারি খাতে কর্মরত পেশাজীবী প্রার্থীদের প্রতিযোগিতামূলক পদ্ধতিতে বাছাই করা হয়।
ফেলোশিপের জন্য নির্ধারিত বিষয়/খাতসমূহ:
মানবসম্পদ ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা
• অর্থনৈতিক উন্নয়ন
• জননীতি বিশ্লেষণ ও জনপ্রশাসন
• মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা
অধিকার ও স্বাধীনতা
• যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা
• আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা
• আইন ও মানবাধিকার
• মানবপাচার নীতি ও প্রতিরোধ
টেকসই ভূমি
• কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন
• প্রাকৃতিক সম্পদ, পরিবেশগত নীতি ও জলবায়ু পরিবর্তন
• নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা
সমৃদ্ধশালী সম্প্রদায়
• ছোঁয়াচে ও সংক্রামক রোগ
• জনস্বাস্থ্য নীতি ও ব্যবস্থাপনা
• এইচআইভি/এইডস, নীতি ও প্রতিরোধ
• মাদকের অপব্যবহার বিষয়ক শিক্ষা, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ
• শিক্ষা প্রশাসন, পরিকল্পনা ও নীতি
• উচ্চ শিক্ষা প্রশাসন
• বিদেশি ভাষা হিসাবে ইংরেজি শেখানো
আরও পড়ুন: আয়ারল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুল-ফ্রি স্কলারশিপ, সঙ্গে থাকছে ২১ লাখ টাকা
হিউবার্ট এইচ হামফ্রে ফেলোশিপের জন্য আবেদন করতে হলে একজন আবেদনকারীকে অবশ্যই নিম্নলিখিত মানদণ্ডগুলো পূরণ করতে হবে:
* বাংলাদেশি নাগরিক এবং আবেদন করা ও আবেদনপত্র বাছাই প্রক্রিয়া চলাকালীন সময়ে বাংলাদেশে অবস্থান করতে হবে।
* দ্বৈত নাগরিক (বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র) কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়া যাবে না।
* আবেদনকারীকে অবশ্যই তরুণ ও মধ্য-পর্যায়ের নেতৃত্বশীল পদে থাকা পেশাজীবী হতে হবে, যার জনসেবায় দৃষ্টান্তমূলক কাজ ও পেশাগত জীবনে অগ্রগতির সম্ভাবনা রয়েছে।
* সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন এমন কেউ হতে পারবেন না।
* পূর্ণকালীন শিক্ষার্থী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কমপক্ষে ৪ বছরের শিক্ষা কার্যক্রম শেষ করার সনদ থাকতে হবে।
* বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জনের পর সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫ বছরের পূর্ণকালীন কাজ করার পেশাগত অভিজ্ঞতা থাকতে হবে (২০২৩ সালের আগস্টের আগে) এবং তাদের শিক্ষা ও কাজ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের নীতিগত দিকগুলোতে আগ্রহ থাকতে হবে।
* শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কিংবা একাডেমিক গবেষক এই ফেলোশিপের জন্য বিবেচিত হবেন না, তাদের অবশ্যই ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে (ব্যতিক্রম হিসেবে বিবেচিত হবেন যদি কেউ মাদকের অপব্যবহার বিষয়ক শিক্ষা, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা এবং বিদেশি ভাষা হিসেবে ইংরেজি শেখানোর দায়িত্ব পালন করেন)।
* ২০২৩ সালের আগস্ট মাসের পূর্ববর্তী ৭ বছরের মধ্যে আবেদনকারী যুক্তরাষ্ট্রের কোনো স্নাতক স্কুলে এক শিক্ষাবর্ষ বা তার বেশি সময়ের জন্য লেখাপড়ায় অংশ নিয়ে থাকলে তিনি এই ফেলোশিপের জন্য অযোগ্য হবেন।
* ২০২৩ সালের আগস্টের আগে ৫ বছরের মধ্যে ৬ মাসের বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করার অভিজ্ঞতা থাকলে তিনি এই ফেলোশিপের জন্য যোগ্য হবেন না।
* ইংরেজি লেখা ও কথা বলা উভয়ক্ষেত্রে দক্ষ হতে হবে এবং টোফেল স্কোর কমপক্ষে ৫২৫ (পেপার-ভিত্তিক) কিংবা ৭১ (ইন্টারনেট-ভিত্তিক) হতে হবে। প্রার্থীদের যাদের টোফেল স্কোরের বৈধ মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে তাদেরকে নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষে টোফেল পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। (আমেরিকান সেন্টার কেবলমাত্র নির্বাচিত প্রার্থীদের জন্য টোফেল পরীক্ষার ব্যবস্থা করবে। অত্যন্ত প্রতিশ্রুতিশীল প্রার্থীরা যদি টোফেলে কম স্কোর পান তাহলে তাদেরকে দীর্ঘ-মেয়াদী ইংরেজি প্রশিক্ষণ (এলটিই)-এর জন্য মনোনীত করা হতে পারে।)
* আবেদনকারীকে অবশ্যই ফেলোশিপের জন্য নির্ধারিত প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও প্রতিশ্রুতি দেখানোর পাশাপাশি একথাও জানাতে হবে যে, তিনি কীভাবে এই ফেলোশিপ থেকে উপকৃত হবেন যা তিনি আগে কখনো হননি এবং হামফ্রে কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ছাড়া এমন অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ তার নেই।
* সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে। সফল প্রার্থীদের মেডিকেল পরীক্ষা করার জন্য অনুরোধ করা হবে।
* ফেলোশিপ শেষ হওয়ার পর বাংলাদেশে ফিরে আসতে হবে।
আবেদন প্রক্রিয়া:
ফেলোশিপ কর্মসূচির জন্য একটি অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। হিউবার্ট এইচ হামফ্রে ফেলোশিপ প্রোগ্রামের আবেদনপত্র ব্যবহারের অনুমতি পেতে একজন আবেদনকারীকে অবশ্যই প্রথমে একটি আইআইই (IIE) অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। আবেদনকারীকে আবেদনপত্র পূরণের সব নির্দেশনা মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।
আবেদন করতে ক্লিক করুন https://www.humphreyfellowship.org.
ফেলোশিপ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন https://bd.usembassy.gov/29650/
ফেলোশিপ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে suhrawardyF@state.gov ই-মেইলে যোগাযোগ করা যেতে পারে।