যে কারণে কমলো জিপিএ-৫ ও পাসের হার
এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে ৮০ দশমিক ৩৯ শতাংশ শিক্ষার্থী, যা গতবারের চেয়ে ৭ দশমিক ০৫ শতাংশ কম। শুধু তাই নয়, এবার জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা কমেছে ৮৬ হাজারেরও বেশি। তাছাড়া ফলাফলের অন্যান্য সূচকে গতবারের চেয়ে নিম্নমুখী লক্ষ্য করা গেছে।
আজ শুক্রবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ২০২৩ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলের সারসংক্ষেপ তুলে দেওয়া হয়। পরে বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের সামনে ফলাফলের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। পরে ফলাফলের তথ্য বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার কারণে ২০২১ ও ২০২২ সালে কম বিষয় ও নম্বরে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। তবে করোনার ধকল কাটিয়ে এবার ফিরেছে আগের মতো স্বাভাবিক সময়ে; নেওয়া হয়েছে পূর্ণ বিষয় ও নম্বরে পরীক্ষার। এ কারণে এবারের পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা করোনার পূর্ববর্তী সময়ে ফিরছে। তবে পরিমার্জিত পাঠ্যসূচি অনুসারেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা।
দেশের ১১ শিক্ষাবোর্ডে এ বছর এসএসসি ও সমমানে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২০ লাখ ৪১ হাজার ৪৫০ জন। এদের মধ্যে পাস করেছে ১৬ লাখ ৪১ হাজার ১৪০ জন। গড় পাসের হার ৮০ দশমিক ৩৯ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৮ জন।
করোনার কারণে ২০২১ ও ২০২২ সালে কম বিষয় ও নম্বরে পরীক্ষা নেওয়া হলেও এবার পরীক্ষা নেওয়া হয় সব বিষয়ে, পূর্ণ নম্বরে। ফলে এবার এর প্রভাব পড়েছে ফলাফলের সব সূচকেই।
গতবার পাসের হার ছিল ৮৭ দশমিক ৪৪ এবং জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন। তার আগে ২০২১ সালে পাসের হার ছিল ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন।
পাসের হার কমার বিষয়ে এক প্রশ্নে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, গত বছর বা তার আগের বছর, আপনি যদি মাত্র তিনটি বিষয়ে বা চারটি বিষয়ে পরীক্ষা দেন আর আপনি এখন ১০টি বিষয়ে পরীক্ষা দিচ্ছেন, পুরো ১০০ নম্বরে সব পরীক্ষা দিচ্ছেন। আর সেবার অনেক কম নম্বরে পরীক্ষা দিয়েছেন, কম বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন, খুব স্বাভাবিকভাবে সেখানে পাসের হার অনেক বেশি ছিল।
তিনি আরও বলেন, এখনকার যে পাসের হার, সেটা কোভিডের পূর্ববর্তী সময়ে আমাদের যে পাসের হার ছিল, স্বাভাবিক সময়ে, তার সঙ্গে খুব সঙ্গতিপূর্ণ।
তথ্যমতে, ২০২১ সালে মাত্র তিন বিষয়ে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। আর বাকি বিষয়গুলোতে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ে জেএসসি থেকে নম্বর দেওয়া হয়েছিল। ফলে ওই পরীক্ষায় তেমন একটা ভালো করেনি। অর্থাৎ ওই সময় পাসের হার বেশি হলেও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা ছিল কম।
তবে ২০২২ সালে এসে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল ৯ বিষয়ে। বিষয় বেড়ে যাওয়ায় তাই পাসের হার স্বাভাবিকভাবে কমেছিল। আর আর বাকি বিষয়গুলোতে সাবজেক্ট ম্যাপিং করা হয়েছিল নবম শ্রেণির বিষয়ের ওপর। তবে সেবার রেকর্ড সংখ্যক ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছিল।
এদিকে, দুই বছর পর স্বাভাবিক অবস্থায় ন্যায় ফিরতে শুরু করেছে এসএসসির সিলেবাস। তারই ধারাবাহিতকায় এবার ২০২৩ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেওয়া হয় সব বিষয়ে, পূর্ণ নম্বর এবং প্রতিটি বিষয়ে ৩ ঘণ্টায় নেওয়া হয় পরীক্ষা।