০৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:৫০

আল্লাহর নিকট যে পাঁচটি জিনিস সবসময় প্রার্থনা করা উচিৎ

প্রতীকী ছবি  © সংগৃহীত

পৃথিবীতে এবং সমগ্র মহাবিশ্বে আল্লাহর সৃষ্টি অগণিত মাখলুকাত রয়েছে। কেবল মানুষ, জিন বা প্রাণী নয়— নভোমণ্ডল এবং ভূমণ্ডলে যা কিছু আছে সবই তাঁর সৃষ্টি। আল্লাহর সৃষ্টির সঠিক সংখ্যা তিনি ছাড়া কেউ জানে না। প্রতিটি সৃষ্টির জীবন ও মৃত্যু আল্লাহ তাআলার হাতে নির্ধারিত। কুরআনের সূরা আলে ইমরানে বলা হয়েছে, প্রত্যেক প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে এবং কেয়ামতের দিন পূর্ণ কর্মফল দেওয়া হবে, যেখানে যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রেখে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, সেই সফলকাম হবে এবং পার্থিব জীবনকে ছলনাময় বলা হয়েছে।

এই আয়াতের মাধ্যমে পরকালীন জীবনের গুরুত্ব এবং দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী ও ছলনাময় প্রকৃতির কথা বোঝানো হয়েছে। দুনিয়ার জীবনে মানুষ যে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ভোগ করে, তা আসল নয় বরং তা এক ধরনের ধোঁকা, যা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করতে পারে। প্রকৃত সফলতা হলো মৃত্যুর পর জাহান্নাম থেকে রক্ষা পেয়ে জান্নাতে প্রবেশ করা। 

তাই একজন মুমিন আল্লাহর নিকট শুধু মৃত্যুই প্রার্থনা করবেন না; বরং সুন্দর, কল্যাণকর ও ঈমানের সঙ্গে মৃত্যুর জন্য দোয়া করবেন। মৃত্যুর জন্য আল্লাহর কাছে পাঁচটি জিনিস চেয়ে নিবেন—

১. মৃত্যুটি যেন নামাজরত অবস্থায় হয়। হাদিসে এসেছে, রাসূল (সা:) বলেছেন, যখন আল্লাহ কোনো ব্যক্তির ভালো চান, তাকে মানুষের প্রিয়পাত্র করেন। কেউ রাসূল (সা:)-কে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল! প্রিয়পাত্র করার অর্থ কী? রাসূল (সা:) বললেন, ‘মৃত্যুর আগে তাকে ভালো কাজে লিপ্ত করেন এবং সে অবস্থায় তাকে মৃত্যু দান করেন’ (সহীহ ইবনু হিববান হা/৩৪২; আহমাদ হা/ ১৭৮১৯; সহীহাহ হা/১১১৪)।

২. আল্লাহ যেন মৃত্যুটি পবিত্র রমজান মাসে নসিব করেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যখন রমজান মাস আসে তখন জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয় আর জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেওয়া হয়।’ (সহিহ বুখারি: ৩২৭৭)।

৩. মৃত্যুবরণের দিনটি যেন জুমাবার হয়। কেননা আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ্ (সা.) বলেছেন- যে কোনো মুসলিম ব্যক্তি জুমাবারে বা জুমার রাতে ইন্তেকাল করবে তাকে আল্লাহ তা’আলা কবরের ফিতনা থেকে হেফাজত করবেন। (তিরমিজী, হাদিস: ১০৭৪; মেশকাত, হাদিস: ১৩৬৭; মুসনাদে আহমাদ, ৬৫৪৬)। 

৪. আমাদের কি অবস্থায়, কোথায় মৃত্যু হয় একমাত্র আল্লাহ তায়ালায় ভালো জানেন। আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করা যেন আমাদের মৃত্যুর সময় শরীরটা পবিত্র থাকে। মুমিনের মৃত্যুর সময় কপালে ঘাম জমা হওয়া এবং মৃত্যুর পর তাকে ভালো অবস্থায় রাখা হয়—এই বিষয়গুলো শরীর পবিত্র থাকার ইঙ্গিত দেয়। 

৫. মৃত্যু সময় আমরা যেন মুখে কালিমা পড়া অবস্থায় মৃত্যুবরণ করতে পারি। মৃত্যুর সময় ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ (আল্লাহ ছাড়া ইবাদতের উপযুক্ত কেউ নেই এবং মুহাম্মদ সা. আল্লাহর রাসুল) এই সাক্ষ্য-বাক্য পাঠ করা যেন আমাদের নসিবে লেখেন। 

এছাড়া আল্লাহর নিকট ঈমানের সঙ্গে, সুস্থ-সবল অবস্থায় সহজ, কবরে আজাব থেকে নিরাপত্তা এবং শহীদের মৃত্যু কামনা।