জেনইউ ইমাজেন ভেঞ্চারস ইয়ুথ চ্যালেঞ্জ জয়ী হলো টিম স্টর্ম ট্রুপারস ও নৈবেদ্য
জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট এবং ইউনিসেফের জেনারেশন আনলিমিটেড প্রোগ্রাম যৌথভাবে আয়োজন করলো ইমাজেন ভেঞ্চারস ইয়ুথ চ্যালেঞ্জ কমিউনিটি সল্যুশন পিচ ডে ২০২৩-২৪। শনিবার (২৫ মে) রাজধানীর আলোকি কনভেনশন সেন্টারে তরুণ উদ্যোক্তা এবং সামাজিক উদ্ভাবকরা বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং জেন্ডার বৈষম্য প্রতিরোধে তাদের বিভিন্ন প্রজেক্ট উপস্থাপন করেন। এ আয়োজনের মাধ্যমে দেশের তরুণ সমাজের সৃজনশীলতা এবং সংকল্পকে তুলে ধরা হচ্ছে।
ছয় মাস ধরে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী ১০০ জনেরও অধিক তরুণ নিয়ে গঠিত ২৪টি দল স্থানীয় প্রশিক্ষকদের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের প্রজেক্টের প্রাথমিক প্রোটোটাইপগুলো তৈরি করে। এ ইভেন্টটি এমন একটি প্রক্রিয়ার পরিণতি যা যুব উদ্ভাবকদের টেকসই উন্নয়ন ও সামাজিক পরিবর্তন সম্পর্কিত তাদের আইডিয়াগুলো উপস্থাপন করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করে। এতে জয়ী হয়েছে টিম স্টর্ম ট্রুপারস ও নৈবেদ্য।
ইভেন্টে অংশগ্রহণকারী দলগুলো তাদের উদ্ভাবনী প্রজেক্টগুলোর মাধ্যমে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধান করেছে। অংশগ্রহণকারী বেশ কয়েকটি দল পরিবেশগত টেকসইতা, নবায়নযোগ্য শক্তি এবং উদ্ভাবনী কৃষি সমাধানের উপর জোর দিয়েছে। এ প্রকল্পগুলো যুব উদ্ভাবকরা তাদের সম্প্রদায়ের সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলার জন্য যেসব বৈচিত্র্যময় এবং প্রভাবশালী পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন তা তুলে ধরে।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, তরুণরাই হচ্ছে পরিবর্তনের কারিগর, যারা একটি সবুজ ও আরও টেকসই বাংলাদেশ তৈরি করছে। তাদের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ইতিমধ্যেই তাদের সম্প্রদায় এবং এর বাইরেও ইতিবাচক রূপান্তরের অনুঘটক হচ্ছে। আজ এতগুলো উদ্ভাবনী আইডিয়া উপস্থাপিত হতে দেখে আমি পুলকিত এবং আমি এগুলো সফলভাবে বাস্তবায়িত হওয়ার অপেক্ষায় আছি, যাতে একটি সমৃদ্ধিশালী ভবিষ্যত নিশ্চিত হয়।
ইভেন্টটিতে অংশগ্রহণকারী ২৪টি দল ইকোসিস্টেম বিল্ডারস, সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট ইনভেস্টরস এবং ফাউন্ডারসদের দ্বারা গঠিত ১২ জন বিচারকমণ্ডলীদের কাছে তাদের প্রজেক্টগুলো উপস্থাপন করে। বিচারকরা প্রজেক্টগুলোকে তাদের সম্ভাব্য সামাজিক প্রভাব, বাস্তবায়নযোগ্যতা, সাংগঠনিক মডেল এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সাথে সামঞ্জস্যের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করেন এবং শীর্ষ দু’টি দল বাছাই করেন।
টিম স্টর্ম ট্রুপারস, নির্বাচিত শীর্ষ দলগুলোর মধ্যে একটি, মাটির লবণাক্ততা মোকাবেলা এবং ফসলের ফলন বৃদ্ধির জন্য একটি ভার্টিক্যাল ফার্মিংয়ের সমাধান তৈরি করে। অন্যদিকে, টিম নৈবেদ্য চায়ের টং এবং ছোট রেস্তোরাঁ থেকে উৎপন্ন চা বর্জ্যকে সাশ্রয়ী মূল্যের সারে রূপান্তর করার একটি প্রকল্প উপস্থাপন করে।
আরো পড়ুন: কানে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেলেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী অনসূয়া
শীর্ষ এই দুটি দল এখন বৈশ্বিক পর্যায়ে অগ্রসর হবে। সেখানে তারা গ্লোবাল জেনইউ ইমাজেন ভেঞ্চারস ইয়ুথ চ্যালেঞ্জে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে। সেখানে তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে এবং বিজয়ীরা তাদের উদ্ভাবনী সমাধান বাস্তবায়নের জন্য ফান্ডিংসহ সামগ্রিক সহায়তা পাবে।
জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের চেয়ারম্যান করভি রাখসান্দ বলেন, জেনইউ ইমাজেন ভেঞ্চারস ইয়ুথ চ্যালেঞ্জে তরুণ উদ্ভাবকদের সৃজনশীলতা এবং দৃঢ় সংকল্প দেখে আমরা অত্যন্ত গর্বিত। জলবায়ু পরিবর্তন এবং জেন্ডার অসমতার মতো কঠিন সমস্যাগুলো উদ্ভাবনী সমাধানের মাধ্যমে মোকাবেলা করার তাদের অঙ্গীকার সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট এ আমরা সকলেই টেকসই পরিবর্তন সাধনে যুবশক্তির ক্ষমতায় বিশ্বাসী এবং এই ইভেন্টটি আমাদের সেই বিশ্বাসকে আরও দৃঢ় করেছে।
২০২৩ সালের বাংলাদেশের বিজয়ী দল ‘বিডি হাইওয়ে টারবাইন’ শীর্ষ ১০টি বৈশ্বিক দলের মধ্যে তালিকাভুক্ত হয়, যারা বর্তমানে ফান্ডিংসহ অনেক এক্সপার্টদের পরামর্শ গ্রহণ করার সুবিধা পাচ্ছে। বিডি হাইওয়ে টারবাইন দলটির এ অর্জন ইমাজেন ভেঞ্চারস ইয়ুথ চ্যালেঞ্জের প্রভাবেরই দৃষ্টান্ত।