বেরোবিতে বেড়েই চলেছে টিকটকারদের দৌরাত্ম্য
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ক্যাম্পাসে বেড়েছে বহিরাগত টিকটকারদের দৌরাত্ম্য। ক্যাম্পাসের ভেতরে অবাধে অসামাজিক টিকটক তৈরি করছেন কিছু তরুণ-তরুণী। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছে বলে অভিযোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ ধরনের কাজের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে টিকটক শুটিংয়ের নামে নানান নোংরামি করলেও এসব বন্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ফলে প্রতিনিয়ত বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থী, এমনকি শিক্ষকরাও।
তাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের মত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টিকটকের নামে এসব কার্যকলাপ বন্ধ করে একটি সুন্দর ও সুস্থ পরিবেশ নিয়ে আসা দরকার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অতিসত্ত্বর এদের (টিকটকার) ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করার দাবি জানিয়ে পোস্ট করেছেন শিক্ষার্থীরা। এমনকি অনেক টিকটিকার ও ক্যামেরাম্যান নারী শিক্ষার্থীদের দেখে অশ্লীল বাক্য উচ্চারণ করেন।
অভিযোগ রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টিয়াল বডির নজরদারির অভাবের সুযোগ নিয়ে অবাধে টিকটক করছেন তারা। শুধু টিকটক নয়, সঙ্গে তাদের মোটরসাইকেল মহড়ার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চলাচলকারীদের জীবনের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে।
আরও পড়ুন: জুমার নামাজ শেষে ইবিতে সিনিয়র-জুনিয়রের মারামারি, আহত ১৫
জানা যায়, কিছুদিন আগে টিকটকার আর বাইকারদের অবাধ প্রবেশ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ গতিসীমা ১০ কি.মি নির্ধারণ করে দেন। কিছুদিন এই নিয়ম চালু থাকলেও বর্তমানে প্রশাসনের অবহেলায় এখন তা আগের থেকে ভয়ংকর রুপ ধারণ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, টিকটক বাইকাররা ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে মোটরসাইকেল চালান। ফলে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ক্যাম্পাসের ভেতরে নিয়ন্ত্রণহীন এমন চলাফেরা তাদের ভীতি সঞ্চার করছে। এতে তারা ক্যাম্পাসে আতঙ্ক নিয়ে চলাফেরা করেন।
শিক্ষার্থী নুসরাত নাজমুন জেরিন বলেন, ক্যাম্পাসে বহিরাগত টিকটকারদের উৎপাত দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারা যেভাবে অবাধে যেকোন জায়গায় টিকটক করছেন, তেমনিভাবে তারা নারী শিক্ষার্থীদের দেখলে অশালীন ভাষা ব্যবহার করেন।
আবু ওবাইদা নামে এক শিক্ষার্থী জানান, ক্যাম্পাসে টিকটকারদের অশালীন কর্মকান্ড দিনদিন বেড়েই চলছে। রংপুরের দর্শনীয় জায়গাগুলোর মধ্যে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে টার্গেট করছে টিকটকাররা। পাবলিক প্লেসে তাদের নানা ধরনের অশালীন অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন শিক্ষার্থীদের বিব্রত করতেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইজার আলী বলেন, আমরা দ্রুত এ বিষয়ে মিটিং করে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর গোলাম রব্বানী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, বহিরাগত কিংবা অভ্যন্তরীণ যেই হোক না কেন যারা সমাজের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়- এমন কোন কিছু করছে জানতে পারি, তাহলে আমরা তাৎক্ষণিক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে প্রশাসন কাজ করছে।