প্ল্যাকার্ড হাতে চা শ্রমিকদের পাশে জবির দুই শিক্ষার্থী
সিলেটের চা শ্রমিকদের দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। বুধবার (২৪ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে প্ল্যাকার্ড হাতে শ্রমিকদের দাবির সঙ্গে একত্মতা জানান তারা।
তারা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের (২০১৫-১৬) শিক্ষাবর্ষের নাহিদ ফারজানা মিম ও বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী খবিরউদ্দিন লানচু।
নাহিদ ফারজানা মীম বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে যেখানে জীবন ধারন কঠিন হয়ে যাচ্ছে সে বাজারে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা নিতান্তই অমানবিক এবং অন্যায্য। চা শ্রমিকদের ৮০ ভাগ নারী শ্রমিক। তারা প্রতিদিন ৮/১০ ঘণ্টা কাজ করে ২৪ কেজি পাতা তোলেন এবং বিনিময়ে পান মাত্র ১২০ টাকা। মালিকপক্ষ মাঝেমাঝে নানান অজুহাতে জরিমানাও করেন।
আরও পড়ুন: চা শ্রমিকদের সাথে সংহতি জানিয়ে ঢাবিতে মানববন্ধন
বহির্বিশ্বের চা শ্রমিকদের চিত্র দেখিয়ে তিনি বলেন, নেপালে চা শ্রমিকের দৈনিক মজুরী ৩২৪ টাকা, কেরালায় ৫০৩ টাকা, কর্নাটকে ৪৪৯ টাকা, শ্রীলঙ্কায় পান ৪১৫ টাকা- সেখানে বাংলাদেশে শ্রমিকদের মজুরী মাত্র ১২০ টাকা।
‘‘দেশ স্বাধীন হলেও এই রাষ্ট্রে চা শ্রমিকদের অবস্থান আধুনিক কৃতদাসের মত। ১২ দিন ধরে ৩০০ টাকা মজুরীর জন্য শ্রমিকেরা কর্মবিরতি ও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। ১২ দিনের টানা আন্দোলনের পরেও মালিকপক্ষ নানান অজুহাতে তাদের নায্য দাবিকে মানতে নারাজ, মালিকপক্ষকে তাদের দাবি মানতে হবে। এই আন্দোলন নায্য আন্দোলন, আমরা তাদের দাবির সাথে সংহতি জানাচ্ছি।’’
অপর আরেক শিক্ষার্থী খবির উদ্দিন লানচু বলেন, চা শ্রমিকদের ৩০০ টাকা মজুরীর দাবি খুবই ন্যায়সঙ্গত। মালিকপক্ষ ও রাষ্ট্রকে তাদের দাবি মানতে হবে। কোনোভাবে তাদের আন্দোলন বা ন্যায্য দাবিকে বানচাল করার চেষ্টাকে আমরা ধিক্কার জানাচ্ছি। চা শ্রমিকদের নোংরা রাজনীতির শিকার না বানিয়ে রাষ্ট্রের উচিৎ তাদের দাবি মেনে নেয়া।
দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে আন্দোলন করছেন চা শ্রমিকরা। মৌলভীবাজারের ৯২টি, সিলেট ও হবিগঞ্জের ২৩টি করে চা বাগানের শ্রমিকরা আন্দোলন করছেন ৯ অগাস্ট থেকে। মৌলভীবাজার ও সিলেটের কয়েকটি বাগানের শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলেও অধিকাংশ বাগানের শ্রমিকরা কাজ থেকে বিরত রয়েছেন।