২২ আগস্ট ২০২২, ২৩:৩২

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের খামে দুর্বল সিলগালা, প্রশ্নবিদ্ধ প্রশ্নের নিরাপত্তা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়  © টিডিসি ফটো

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় শনিবার (২২ জুলাই)। এদিন ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে গোপনীয়তা রক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ইবি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, একটি কক্ষে প্রশ্নপত্র সিলগালা করা একটি খামের কসটেপ কাটা অবস্থায় পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তাৎক্ষণিক বিষয়টি ইবিতে আসা গুচ্ছের প্রতিনিধি টিমকে অবগত করা হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি তারা। প্রশ্নবিদ্ধ প্রশ্নপত্র নিয়ে পরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন। 

জানা যায়, শনিবার গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর প্রথম বর্ষ স্নাতক সম্মান ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ব্যবসা অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে এক হাজার চারশত চার জন পরীক্ষার্থী অংশ নেন। দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিন সকাল ৯টা ২৬ মিনিটে গুচ্ছের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল প্রশ্নপত্রের ট্রাঙ্ক ইবির ইউনিট সমন্বয়কারী অধ্যাপক সাইফুল ইসলামের নিকট হস্তান্তর করেন। এসময় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আলমগীর হোসেন ভূঁইয়াসহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

সবার উপস্থিতিতে সিলগালা করা ট্রাঙ্কটি উম্মুক্ত করা হয়। এরপর কক্ষ অনুযায়ী প্রশ্নপত্রেরে খাম গুলো পরীক্ষা শুরুর এক ঘন্টা পূর্বে সরবরাহ করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসন অনুষদ ভবনের ১০২ নম্বর কক্ষে প্রশ্নপত্রের খামে লাগানো কসটেপ কাটা থাকার অভিযোগ উঠেছে। ওই কক্ষের কর্তব্যরত শিক্ষক ইইই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপাক ড. আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ও আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. খন্দকার তৌহিদুল আনাম তমাল বিষয়টি দেখতে পায়। পরীক্ষা শুরুর তিন থেকে চার মিনিট পূর্বে প্রশ্ন বিতরণ করার সময় বিষয়টি নজরে আসে তাদের। তাৎক্ষণিক তারা ঘটনাটি ইউনিট সমন্বয়কারীকে অবগত করেন। পরে তিনি বিষয়টি ইবিতে আসা গুচ্ছের প্রতিনিধি দলের প্রধান শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল গণিকে অবগত করেন।

এ বিষয়ে সহযোগী অধ্যাপাক ড. আব্দুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, তিন-চার মিনিট পূর্বে স্যাররা আমাকে খামটা খুলতে বলেন। কসটেপ লাগানো থাকায় খাম সাধারণত একটু কষ্ট করে খুলতে হয়। কিন্তু কলম দিয়ে একটা মাথা আলাদা করার সাথে সহজে মাঝ খান থেকে টেপ উঠে আসলো। ভাবলাম টেপ পঁচা। তখন সাইড থেকে একটু টেপ তুলে টেনে দেখলাম পঁচা না। টেপটা এন্টিকাটার বা ধারাল কিছু দিয়ে মাথার দিকে এমনভাবে কাটা যাতে পুরো খাম ওপেন করা যাবে। তখন সংশ্লিষ্ট স্যারসহ প্রতিনিধি দলের সদস্যদের জানাই। তারা বললো পরীক্ষা যেহেতু শুরু হয়ে গেছে তাহলে চলুক।

আরো পড়ুন: ৩ লাখে ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি, ভাইভায় এসে আটক

এ বিষয়ে আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. খন্দকার তৌহিদুল আনাম তমাল বলেন, মাসুদকে খুলতে বলার পর সে কলম দিয়ে খোঁচা মেরে দেখল এই অবস্থা। প্রশ্নের প্যাকেট সিলগালায় সিগনেচার বা কোন কিছু দেখা যায়নি। আমার কাছে বিষয়টি সঠিক মনে হয়নি।

এ বিষয়ে ‘সি’ ইউনিটের ইবির সমন্বয়কারী অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, খামগুলো সাদা কসটেপ দিয়ে চারপাশে মোড়ানো ছিলো। এই খামের কসটেপটি কাটা ছিলো। আমাকে জানালে আমি প্রতিনিধি দলের প্রধানকে জানালাম। উনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে তিনি বলেন যে খোঁজ খবর নিয়ে আমাদের জানাবেন। পরে আর কোন নির্দেশনা না দেওয়ায় আমরা আমাদের মত কাজ চালিয়ে গিয়েছি। কাটা থাকার কারণে পশ্নপত্র বের করে নেওয়ার একটা আশঙ্কা থাকে। আমি ব্যস্ততার কারণে আমাদের কর্তৃপক্ষকে তাৎক্ষণিক জানাতে পারিনি। পরে রবিবার বিকেলে প্রো-ভিসিকে জানিয়েছি।

এদিকে প্রতিনিধি দলের প্রধান আব্দুল গণি এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না দেওয়ায় প্রশ্নবিদ্ধ প্রশ্নপত্র দিয়েই অনুষ্ঠিত হয়েছে পরীক্ষা। 

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার যুগ্ম আহ্বায়ক শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এ নিয়ে আমি কোন মন্তব্য করব না। তদন্ত করে দেখব।