উপাচার্য-ছাত্রলীগ দ্বন্দ্বের ভিডিও করায় সাংবাদিককে হেনস্তা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাথে উপাচার্যের বাকবিতবিতণ্ডার ঘটনা ভিডিও করতে গেলে এক সাংবাদিককে হেনস্তা করে বের করে দিয়েছেন সহকারী প্রক্টর ও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহাবুবুল হক ভূইঁয়া।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় উপাচার্যের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী সাংবাদিক হলেন বাংলাদেশ জার্নালের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ও লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাঈমুর রহমান রিজভী।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ছাত্রকল্যাণ ফান্ড গঠন, ছাত্রীদের কমনরুম, ক্যাফেটেরিয়ার খাবারে ভর্তুকিসহ ১৪ দফা দাবিতে মানবববন্ধন করে শাখা ছাত্রলীগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। দেড়ঘণ্টার মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কেউ না আসলে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করতে যায় তারা। পরে চাকরি, টেন্ডারসহ বিভিন্ন বিষয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন উপাচার্য ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
এসময় মুঠোফোনে ভিডিও করতে গেলে সাংবাদিক নাঈমুর রহমান রিজভীকে ভিডিও করার কারণ জানতে চেয়ে সহকারী প্রক্টর মাহাবুবুল হক ভূইঁয়া বলেন, ‘আপনি কি করতেছেন? পারমিশন নিছেন? এটা তো আপনি করতে পারেন না।’ তখন সাংবাদিক পরিচয় দিলে তিনি বলেন, ‘কোথাকার সাংবাদিক? আপনি কি নিউজের জন্য করতেছেন? আপনি তো এটা করতে পারেন না। আপনি পারমিশন নিছেন? এটা তো মামলা করার মতো কাজ করছেন?’ পরে সাংবাদিককে হেনস্তা করে উপাচার্য কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: রাবি ভর্তি: ছাত্রাবাসে অভিভাবক থাকতে লাগবে ৫০০ টাকা!
ভুক্তভোগী সাংবাদিক নাইমুর রহমান রিভজী বলেন, উপাচার্যের সাথে ছাত্রলীগের উচ্চবাচ্য হলে আমার পেশাদারিত্বের জায়গা থেকে ভিডিও করি। এসময় ভিডিও করায় একজন সহকারী প্রক্টর আমাকে মামলার হুমকিসহ হেনস্তা করেন। এসময় আমাকে উপাচার্যের কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।
তবে সাংবাদিককে বের করে দেয়ার বিষয় অস্বীকার করে সহকারী প্রক্টর ও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহাবুবুল হক ভূইঁয়া বলেন, বের হয়ে যাওয়ার কথা আমি বলি নাই। ভাইস চ্যান্সেলর বলছে, পরে আমরা বলেছি। সে সাংবাদিক পরিচয় দেয় নি। সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পরও মামলার কথা বলার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলা করার বিষয় যখন বলেছি তখন জানতাম না সে সাংবাদিক। মামলার বিষয়ে কেন বলছেন জানতে চাইলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি নন বলে জানান।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, এখানে প্রায় ৫০ জনের মতো লোক ছিলো। আসলে এগুলো ফরমালি নেয়ার দরকার নেই। সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর আমি চেষ্টা করেছি বিষয়টি থামাতে। মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি আরেক সাইডে ছিলাম। এ বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এফ. এম. আবদুল মঈন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এ বিষয়ে ওই শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলে ভালো হবে। আমি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না।