নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছেন কুবি শিক্ষার্থীরা

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক  © টিডিসি ফটো

পবিত্র ঈদুল আজহার আর বেশী দিন বাকি নেই।  এ উপলক্ষে ছুটি হয়ে গেছে ক্যাম্পাস। হল গুলোও বন্ধ হয়ে গেছে ৪ই জুলাই থেকে। এরই মাঝে নিজের ব্যাস্ততাকে ছুটি দিয়ে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের ফেরার অপেক্ষায় অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছেন বাবা-মা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন।  ঈদ আনন্দকে পরিবারের সাথে ভাগাভাগি করে নিতেই ছুটছেন তারা। 

নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে শিক্ষার্থীদের অনেকে অগ্রিম টিকিট কেটে রেখেছিলেন। নির্ধারিত সিডিউল অনুযায়ী বাস, ট্রেন ও লঞ্চযোগে বাড়ি ফিরছেন। আনন্দ ভাগাভাগির এই চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে সবার মধ্যে। শিক্ষার্থীরা সেই অনুভূতির কথা জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিবুল হাসান শান্ত বলেন, আমার বাড়ি দিনাজপুরে।  উচ্চশিক্ষার সুবাদে থাকা লাগে দেশের মধ্যপূর্বাঞ্চলের এই ক্যাম্পাসে। দুই ঈদ ছাড়া গ্রামের বাড়ি খুব বেশী একটা যাওয়া হয় না। তাইতো বাবা মায়ের সাথে ঈদ করতে ছুটছি নিজ এলাকায়।

তিনি আরও বলেন, ১৩/১৪ ঘণ্টা জার্নি করে এসে বাবা-মায়ের মুখ দেখা যে কি আনন্দের সেটা বলে বোঝানোর মত নয়।  বাসা দিনাজপুরে হওয়ায় দুই ঈদেই শুধুমাত্র বাসায় আসা হয়, আব্বু-আম্মু চাতক পাখির ন্যায় চেয়ে থাকে কখন আমি বাসায় আসব, কখন আব্বুর সাথে গিয়ে কোরবানির গরু কিনে আনব। আমাকে দেখার পর তাদের চোখে-মুখে যে আনন্দ তা আমি মুখে প্রকাশ করতে পারবো না।

আরও পড়ুন: ঢাবি শিক্ষক মোর্শেদকে বাসা ছাড়তেই হচ্ছে

কেউ কেউ আবার পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে বাড়ি ফিরছেন, তাদের আনন্দটা অন্যদের চেয়ে একটু বেশী। এ অনুভূতির কথাই জানাচ্ছিলেন আইন বিভাগের ১৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মিথিলা মিনহা। 

তিনি বলেন, ঈদ মানেই খুশির আমেজ। এই খুশির মাত্রা আরও দ্বিগুন হয় যখন ক্যাম্পাস থেকে বাসায় যাই।  অনেক দিন পর পরিবারের সবার সাথে দেখা হবে এটা ভেবেই এক অন্যরকম অনুভূতি কাজ করে।  তবে  এবার আমার আনন্দের জায়গাটা একটু বেশিই ছিলো।  কারণ আমার বাসা গোপালগঞ্জ হওয়ার কারণে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে আমার বাসায় গিয়েছি এতে যেমন যাত্রা পথের ভোগান্তির মাত্রা কমে এসেছে তেমনি অন্যরকম একটা অনুভূতি কাজ করেছে।

জয়পুরহাটের ছেলে মোঃ আহাদ।  থাকেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে।  দুই ঈদেই মূলত পরিবারের সাথে সময় কাটানোর সুযোগ হয়।  আর সে সুযোগটাকে নির্বিঘ্ন করতে অগ্রিম টিকিট কেটে রেখেছেন।  

তিনি জানান, ঈদে পরিবারের সাথে সময় কাটানো একটা আবেগের নাম। পরিবারের বড় ছেলে হিসেবে কোরবানির ঈদে গরু কেনার দায়িত্বটা সাধারণত আমার উপর একটু বেশীই থাকে। কোরবানির হাটে গিয়ে গরু কেনার মজাটাই অন্যরকম। আমরা যারা উত্তরবঙ্গের আছি তারা পরিবারের সাথে সময় কাটানোর জন্য সাধারণত বছরে খুব বেশি একটা সময় পাই না, দুই ঈদই ভরসা।

চট্রগ্রামের বাঁশখালির মেয়ে আঁখি আক্তার। পড়াশোনা করছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ১৪তম ব্যাচে।  তিনি জানান, প্রতিবার ঈদের ছুটিতে বাড়ি আসব এটা শুনে পরিবারের সবাই আমার চেয়ে বেশি খুশি হয়, বিশেষ করে মা সারাদিন অপেক্ষায় থাকে। বাসায় পৌঁছে পরিবারের সবার চোখে মুখে যে আনন্দ সেটা ভাষায় বলে বুঝাতে পারব না, বিশেষ করে পরিবারের ছোটদের খুশি আর কে দেখে। এই অনুভূতি টা আমার কাছে সত্যিই অনেক আনন্দের।


সর্বশেষ সংবাদ