ইবি শিক্ষকের বাসা থেকে স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
কুষ্টিয়া শহরের কমলাপুর এলাকার একটি বাসা থেকে নুরজাহান পারভীন (৪২) নামে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষকের স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালের দিকে ওই বাসার বেড রুম থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মারা যাওয়া নুরজাহানের পরিবারের অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে তাকে। পরে আত্মহত্যা বলে চালাতে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়। নুরজাহানের শরীরে জখমের চিহ্ন আছে বলে দাবি করেছে পরিবারের লোকজন।
মারা যাওয়া নুরজাহান পারভীন (৪২) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইলেকট্রনিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নজরুল ইসলামের স্ত্রী। এই দম্পতির সাইয়াম ও শ্রেয়া নামের দুই সন্তান রয়েছে।
এলাকাবাসী, নুরজাহানের পরিবার ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে,বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নজরুল ইসলামের শহরের কমলাপুরে দুইতলা একটি বাড়ি রয়েছে। বাড়ির নিচতলায় তিনি নিজ পরিবার থাকতেন । অর্জন দাস আগরওয়ালা সড়কের এ বাড়ি থেকে মঙ্গলবার সকালে নুরজাহানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। যে ঘরে তার মরদেহ পাওয়া যায় সেখানে দুটি দরজা আছে। মমরদে উদ্ধারের সময় সদর দরজা বন্ধ থাকলেও পেছনের দরজাটি খোলা ছিল বলে পুলিশ জানায়।
এদিকে, খবর পেয়ে সকালে বাড়ি থেকে নুরজাহানের মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। সেখানে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে দুপুরে পরিবারের লোকজন মেহেরপুরের গাংণী উপজেলার মিনাপাড়ায় নিয়ে যায়।
নুরজাহানের সন্তানরা জানান,তাদের বাবা প্রায়ই মাকে মারধর করতেন। গত পরশুদিনও ক্রিকেট খেলার ব্যাট দিয়ে তাদের মাকে বেদম মারপিট করে অধ্যাপক নজরুল ইসলাম।
একাধিক সুত্র জানায়, শিক্ষক নজরুল ইসলাম মাদকাসক্ত ছিলেন। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি চলে আসছিল
নুরজাহানের ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বিয়ের পর থেকে তার বোনকে মারধর করে আসছিলো দুলাভাই। কয়েকদিন আগেও আপাকে বেদম মারপিট করা হয়। জাহাঙ্গীরের দাবি, তার বোনকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় পরিবার থেকে মামলা করা হবে বলেও জানান তিনি।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আশরাফুল আলম বলেন, নুরজাহানের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে দেওয়া হয়েছে। তার শরীরের নানা স্থানে জখম ছিল। ময়না তদন্ত রিপোর্ট আসার পর হত্যার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি সাব্বিরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে পারিবারিক কলহ থেকে নুরজাহান আত্মহত্যা করেছেন। তারপরও আমরা তদন্ত করে দেখছি। পরিবার থেকে অভিযোগ দিলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে স্ত্রীর মরদেহ পাওয়ার পর থেকে নজরুল ইসলাম গা ঢাকা দিয়েছেন। তার ফোনে রিং দিলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।