পাবিপ্রবি কর্মকর্তার সঙ্গে সহকর্মীর প্রেম, ক্যাম্পাস গেইটে আরেক প্রেমিকার আত্মহত্যা চেষ্টা
সহকর্মীর সঙ্গে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) এক কর্মকর্তার প্রেমের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ার পর তার ‘‘আরেক প্রেমিকা’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে এসে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ওই কর্মকর্তার নাম মনোয়ার আলম তুষার, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার হিসেবে নিযুক্ত আছেন। প্রতারণার শিকার হয়ে ওই তরুণী গতকাল রবিবার (২২ মে) বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান বলে জানা গেছে। সোমবার (২৩ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয়টি ‘‘টক অব দ্যা ক্যম্পাস’’ হলেও দায়িত্বশীল কেউ মুখ খুলছেন না।
সূত্র জানায়, রবিবার বিকেলে সেকশন অফিসার তুষারের সঙ্গে ওই তরুণীর বিয়ে নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। এর একপর্যায়ে বিষপান করেন তিনি। ঘটনাস্থল থেকে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপালে চিকিৎসাধীন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার দুপুরের পর পরই ওই তরুণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে সেকশন অফিসার মনোয়ারুল আলম তুষারের সঙ্গে দেখা করেন। সেখানেই দীর্ঘ আলাপচারিতার একপর্যায়ে তিনি বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। অভিযুক্ত তুষার ও তার সহকর্মীরা তাৎক্ষণিকভাবে ভুক্তভোগীকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করেন। খবর পেয়ে হাসপাতালে আসেন ওই তরুণীর পরিবার।
মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ, বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তড়িঘড়ি করে পাবনায় প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর রবিবার রাতেই তাকে রাজশাহী নিয়ে যাওয়া হয়।
পাবিপ্রবি ফটকের চা বিক্রেতা রহমান জানান, দুপুরের পরে হঠাৎ করেই তুষার ও তার এক নারী সহকর্মীর সঙ্গে ওই তরুণীর তুমুল কথা-কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ওই তরুণী ব্যাগ থেকে বের করে ‘‘কিছু একটা’’ পান করেন।
অভিযুক্ত পাবিপ্রবির সেকশন অফিসার মনোয়ারুল আলম তুষারের গ্রামের বাড়ি জেলার বেড়া পৌর এলাকার বৃশালিকা গ্রামে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তুষারের একাধিক প্রতিবেশী জানান, বিষপান করা ওই তরুণী তুষারের প্রতিবেশী এবং তাদের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ের কথাও হয়েছিল। তুষার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ওই তরুণী ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। সম্প্রতি তুষার পাবিপ্রবির সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ পান। একই সঙ্গে নিয়োগ পাওয়া তার এক নারী সহকর্মীর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার গল্প ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে ওই তরুণী ও তুষারের মনোমালিন্য চলছিল।
অভিযোগ ওঠার পর বেড়া পৌরসভার কয়েকজন কাউন্সিলর তুষারের বাড়িতে গিয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেন।
এ বিষয়ে বেড়া পৌরসভার মেয়র আসিফ শামস রঞ্জন বলেন, বিষয়টি যেহেতু আমার এলাকার, সেহেতু খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি পারিবারিকভাবে মীমাংসা করা হবে বলে জানান অভিযুক্ত পাবিপ্রবির সেকশন অফিসার মনোয়ার আলম তুষার।
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর হাসিবুর রহমান বলেন, ‘‘যেহেতু বিষয়টি ক্যাম্পাসের বাইরের, সেহেতু আমাদের কোনো করণীয় নেই। তবে অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’