গুচ্ছের ভাগ্য নির্ধারণ কাল
২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে সম্মান শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষায় গুচ্ছ পদ্ধতিতে কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে সে বিষয়ে আগামীকাল সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে বৃহস্পতিবার উপাচার্যদের একটি সভা রয়েছে। সেখানে গুচ্ছের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। পরের দিন উপাচার্য পরিষদের আরেকটি সভা রয়েছে। সেখানে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ চূড়ান্ত করা হবে।
সম্প্রতি গুচ্ছে না থাকার পক্ষে মত দিয়েছেন জগন্নাথ, কুমিল্লা, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক সমিতি আলাদা সভা করে নিজ নিজ উপাচার্যকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের দাবি জানিয়েছেন। গুচ্ছে থাকলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ভর্তি কার্যক্রম থেকে বিরতি নেবেন বলেও হুমকি দিয়েছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামও গুচ্ছে থাকার পক্ষে নন।
তিনি বলেন, শিক্ষকদের দাবিগুলোর একটা চিঠি হাতে পেয়েছি। তাদের দাবির সঙ্গে আমিও একমত। কয়েকদিন পর আমাদের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত মিটিং আছে সেখানে এ দাবিগুলো উত্থাপন করবো।
আরও পড়ুন- গুচ্ছ পদ্ধতি কি থাকছে?
২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে প্রথমবারের মতো ২০টি সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় একসঙ্গে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করে। শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি দূর করতে ও আর্থিক অপচয় রোধ করতে এমন উদ্যোগ নেয়া হলেও সেটি ফলপ্রসূ হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আলাদা আলাদা ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেয়ায় ভোগান্তি ও অর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া ভর্তির ক্ষেত্রে সমন্বয় না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বারবার বিজ্ঞপ্তি দিয়েও শিক্ষার্থী সঙ্কটে ভুগেছে। এতে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন শিক্ষকরা। বাধ্য হয়ে আসন ফাঁকা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম শেষ করতে হয়েছে তাদের।
সূত্র জানায়, গতবার গুচ্ছের নেতৃত্বে ছিলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এবার এই দুইটি বিশ্ববিদ্যালয়ই গুচ্ছে না থাকার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। সেই সঙ্গে আরও কয়েকটি প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গুচ্ছের বিপক্ষে অবস্থান নেয়ায় ভাঙনের মুখে পড়েছে এই পদ্ধতিটি।
এদিকে দেশের সেরা চারটি বিশ্ববিদ্যালয় এবারও নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার কথা জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো- ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
এসব বিষয়ে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, আগামীকাল আমাদের ইউজিসির সঙ্গে একটা বৈঠক রয়েছে। সেখানে আশা করি গুচ্ছে কে থাকবে বা কে থাকবে না সেটি ঠিক হয়ে যাবে। মিডিয়ার মাধ্যমে দেখেছি কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি গুচ্ছে না থাকার পক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনগুলো এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি গুচ্ছ থাকবে। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে সব শিক্ষকই গুচ্ছ পদ্ধতি চান।
তিনি আরও বলেন, গুচ্ছ না থাকলে আমরাও আলাদা ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা নেবো। সেক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না।