বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে ছাত্রলীগের দুপক্ষে উত্তেজনা, ২ সাংবাদিক আহত
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসের কর্মসূচি উদযাপন নিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) ছাত্রলীগের দুইপক্ষে মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এ সময় উভয়পক্ষের নেতাকর্মীরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। এ ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে ক্যাম্পাসের দুই সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বল্পসময়ের মধ্যে নিয়ন্ত্রণে আসে। আহত দুজনকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির জেরে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি গঠন করা হয়নি। যে যার মতো করে বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আর গ্রুপগুলো দীর্ঘদিন ধরে আলাদা আলাদা কর্মসূচিও পালন করে আসছে। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রায়ই বিবাদে জড়ায় পক্ষগুলো।
সেই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসেও পৃথক কর্মসূচি পালন ঘোষণা করে পক্ষগুলো। দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-১ এর নিচতলায় ছাত্রলীগের রক্তিম-ইভান এবং সিফাত-রিদম গ্রুপ বিবাদে জড়ায়। পরে তা হাতাহাতি ও মারামারিতে গড়ায়।
আরও পড়ুন: আট বছরেও কমিটি পায়নি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ
এ ঘটনার ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হন ক্যাম্পাসে থাকা সাংবাদিকরা। আজম খাঁন ও তারিকুল ইসলাম নামে দুজন সংবাদকর্মী মারধরের শিকার হন।
হামলায় আহত আজম খাঁন জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সিটি মেয়র ও স্থানীয় সংসদ সদস্যদের অনুসারী ছাত্রলীগের দুটি গ্রুপ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালনকালে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, এসময় সংঘর্ষের দৃশ্য ধারণ করতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী আল সামাদ শান্তসহ ৩-৪ জন ছাত্রলীগের কর্মী সংবাদকর্মীদের মোবাইল ফোন ও অন্যান্য সামগ্রী কেড়ে নেন। পরে সেগুলো আনতে গেলে তারা মারধর করেন।
এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. খায়রুল ইসলাম সোহাগ বলেন, ঘটনার সময় আমি ব্যক্তিগত কারণে ক্যাম্পাসে ছিলাম না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক আজম খান (আবির) হামলার শিকার হয়েছেন এ মর্মে আমাকে অভিযোগ করেছেন। তাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রোক্টর মহোদয়ের কাছে জানাতে বলেছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. খোরশেদ আলম বলেন, কর্মসূচি পালন নিয়ে সংঘর্ষ নয়, তবে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের হস্তক্ষেপে দুই গ্রুপকে দুদিকে বিভক্ত করে দেওয়া হয়েছে।