ঢাবি ক্যাম্পাস যেন টিকটকারদের শুটিং স্পট
দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসের ভেতরের সড়ক গুলোয় ভারী যানবাহনের অবাধ চলাচল, ভবঘুরে, পাগল ও হিজড়াদের উৎপাতসহ প্রচুর পরিমাণে বহিরাগতদের আসা-যাওয়া বন্ধ করতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসছিল শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে গিয়ে সমস্যা সমাধানে প্রশাসন কর্তৃক কার্যকরী কোন পদক্ষেপ বা সমাধানের দেখা মেলেনি। তবে মানববন্ধন, মিছিল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় ক্ষোভ জানাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের এমন ক্ষোভের মধ্যেও ইদানীং আবারও ঢাবি ক্যাম্পাসে বহিরাগত বিভিন্ন টিকটক সেলিব্রিটিদের ভিডিও শুটিংয়ের পরিমাণ বেড়ে গেছে।
জানা যায়, কয়েক দিনে ঢাবির মলচত্ত্বর, টিএসসি ও কার্জন হল এলাকায় বেশকিছু টিকটকার বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিতে শুটিং করছে। তাদের এই ভিডিওগুলো পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপেও ভাইরালও হচ্ছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে আবার নতুন করে উদ্বেগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় টিকটকারদের দৌরাত্ম্য খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের অনেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেও দোষারোপ করছেন।
ঢাবির আরবি বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী তৈয়বুর রহমান বলেন, টিকটক বর্তমানে একটা সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। উঠতি বয়সের কিছু উশৃঙ্খল ছেলে-মেয়ে এই কাজের সাথে জড়িত। যা সমাজের অধিকাংশ মানুষের কাছেই দিনদিন খারাপ কাজ হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মতো একটা জায়গায় টিকটক করা মানে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করা। যা আমাদের জন্য অসম্মানের কারণ।
আরও পড়ুন : সাকিবকে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্রাম
‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ’ নামে ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করা একটি টিকটক ভিডিও এর কমেন্ট বক্সে ঢাবির এক ছাত্র মন্তব্য করেছেন, এগুলো দেখলে মনে হয় রবীন্দ্রনাথ ঠিকই বলেছিলেন, মূর্খের দেশে আবার কিসের বিশ্ববিদ্যালয়? একটা কৃষি ইন্সটিটিউট করে দিলেই হয়।
এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়েরই কিছু লক্ষ্য-উদ্দেশ্য বা আদর্শ থাকে। এ সমস্ত কাজ আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আদর্শের সাথে যায় না। এ ব্যাপারে আমরা কয়েকবার অভিযোগ পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ও শিক্ষা বান্ধব পরিবেশ নষ্ট হয় এমন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যের পরিপন্থী যে কোন ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে সবাইকে বিরত থাকার অনুরোধ করছি।। যদি বারবার এর ব্যত্যয় ঘটে তাহলে আমরা অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।