বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে অসত্য তথ্য দেওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানকে শোকজ
চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে অসত্য ও বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দেওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।
তিন কার্যদিবসের মধ্যে নোটিশের জবাব না দিলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অঞ্জনা খান মজলিশ স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত নোটিশ জারি করা হয়।
আরও পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলায় আপত্তি নেই: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়ে কেবলমাত্র একবার প্রাক্কলন তৈরি করা হয়েছে এবং উক্ত প্রাক্কলনের বিরুদ্ধে আপনি মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন দায়ের করেছেন। অথচ মাইটিভিতে বক্তব্য দেওয়ার সময় আপনি বলেন, আমরা কোনও রেট দেই না, আগের রেটটাও ডিসি সাহেব করেছে; পরেরটাও ডিসি সাহেব করেছেন।
ডিসির স্বাক্ষর করা ওই নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, অধিগ্রহণের জন্য প্রস্তাবিত এলাকায় ভূমির মালিক ও রিটকারী হিসেবে জেলা প্রশাসক কর্তৃক একবার প্রাক্কলন তৈরি করা হয়েছে জেনেও আপনি টিভি চ্যানেলে আগের রেট, পরের রেট অর্থাৎ দুই রেট উল্লেখ করে অসত্য ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দেওয়ায় সরকারি কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে বিধায় কেন আপনার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার কারণ চিঠি পাওয়ার তিন কার্যদিবসের মধ্যে দাখিল করার জন্য বলা হলো। অন্যথায় আপনার বিরুদ্ধে বিধিগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম খানের বাড়ি মেঘনা নদীর খুব কাছে। চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত ভূমি অধিগ্রহণের জন্য সেখানে তিনি জমি ঠিক করে রাখেন। সেখানে তিনি ৬২ একর ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করেন। সেখানেসেলিম খান, তাঁর ছেলেমেয়েসহ অন্যান্য জমির মালিকেরা অস্বাভাবিক উচ্চমূল্যে দলিল তৈরি করেছেন। ফলে ওই জমি অধিগ্রহণে সরকারের ব্যয় বেড়ে ৫৫৩ কোটি টাকা দাঁড়ায়। এই টাকা হাতিয়ে নিতে চেয়ারম্যান সেলিম খান উচ্চ আদালতে রিটও করেন।
আরও পড়ুন: ২০ বছর পর হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে খুঁজে পেলেন মা-বাবা
প্রসঙ্গত, ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাটের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিতি আছে সেলিম খানের। অভিযোগ আছে, অবৈধভাবে অর্জিত কোটি কোটি টাকা বৈধ করতে চলচ্চিত্র প্রযোজনায় নামেন সেলিম খান। চলচ্চিত্রে ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন তিনি। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে এসব অর্থের বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। শাপলা মিডিয়া নামে প্রযোজনা সংস্থা আছে সেলিম খানের।
এর বাইরেও দুদকের অনুসন্ধানে সেলিম খানের প্রায় ২১ কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসবের মধ্যে আছে রাজধানীর কাকরাইলে ৪ তলা ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ১০ তলা বাড়ি, কাকরাইলে ফ্ল্যাট, দুটি ব্যক্তিগত গাড়ি, সাড়ে ৪ একর জমি ইত্যাদি।