জবি শিক্ষিকা বাবলির মৃত্যুতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাঈদা নাসরিন বাবলী নিহতের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রোববার (১৪ নভেম্বর) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
নিহত সাঈদা নাসরিন বাবলী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশারের স্ত্রী। গত ৭ জুলাই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তিনি মারা যান। পরে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ এনে একটি রিট করে তার পরিবার। সেই রিটের শুনানিতে রোববার এমন আদেশ দেন আদালত।
বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশে বলা হয়েছে, জেলা জজ পদ মর্যাদার একজন বিচারক এ তদন্ত কমিটির প্রধান হবেন। সঙ্গে সদস্য হিসেবে থাকবেন একজন সহযোগী অধ্যাপক পদমর্যাদার মেডিসিন বিভাগের একজন চিকিৎসক এবং অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল পদমর্যাদার একজন আইন কর্মকর্তা।
এই কমিটি বাবলীর মৃত্যুর ঘটনায় স্কয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনো অবহেলা আছে কি না, তা তদন্ত করবে।
আদালত ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে বাবলীর পরিবারকে ১৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে একটি রুল জারি করেছেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
সাঈদা নাসরিন বাবলীর ৫ বছর বয়সী শিশু সন্তান ইউজারসিফ মাহমুদ বর্ণভ গত ১২ অক্টোবর এ রিট দায়ের করেন। রিটে বাবলীর মৃত্যুতে স্কয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের অবহেলাকে দায়ী করে মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করতে আবেদন করা হয়। এছাড়া স্কয়ার হাসপাতালের কাছে ১৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয় ওই রিটে।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২০ জুন বাবলী রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সেখানেই ৭ জুলাই ভোরে মারা যান তিনি। পরিবারের অভিযোগ, তার চিকিৎসায় অবহেলা করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সাঈদা নাসরিন বাবলীর গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়ার ঝিকিরা গ্রামে। সেখানেই তাকে দাফন করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হওয়া বাবলী রাষ্ট্রপতির স্বর্ণপদক পেয়েছেন।তিনি ৩২তম বিসিএসেও উত্তীর্ণ হন। মৃত্যুকালে তিনি এক শিশুপুত্র ও স্বামীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।