জবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচন: প্রচারে ব্যস্ত আশরাফ-আনোয়ার প্যানেল
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচন আগামী ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন ঘিরে সরব প্রার্থীরা। এবারও নীল দলের দুই গ্রুপ বিভক্ত হয়ে নির্বাচন করছেন। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় (আশরাফ-আনোয়ার) প্যানেল আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষক সমিতি বৈশ্বিক করোনা মহামারির কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও সর্বক্ষেত্রে সম্মানিত শিক্ষকদের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছে। শিক্ষকবৃন্দের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ও নিবিড় ঐক্য গড়ে তুলতে অধ্যাপক মোঃ আশরাফ উল-আলম ও অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন প্যানেল বিভিন্ন এজেন্ডাসমূহ বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকবেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সুরঞ্জন কুমার দাস বলেন, আগামী ৮ তারিখ শিক্ষক সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। করোনার কারণে দীর্ঘদিন পর নির্বাচন হতে যাচ্ছে। দুই পক্ষই প্রচারণায় ব্যস্ত। এখন পর্যন্ত কারও কোনো অভিযোগ নেই। ভোটার তালিকার বিষয়ে তিনি বলেন, সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভা অনুযায়ী যে সকল শিক্ষকদের নামের তালিকা প্রকাশ হয়েছে, তারাই ভোট দিতে পারবে।
এজেন্ডাগুলো হলো, অর্গানোগ্রাম অনুসারে বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষকবৃন্দের পদ ছাড়করণের ব্যবস্থা ও নতুন পদ অনুমোদন করে অস্থায়ী ও শিক্ষাছুটির বিপরীতে নিয়োগকৃত শিক্ষকবৃন্দের স্থায়ীকরণের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ, শিক্ষকবৃন্দের নিয়োগ ও পদোন্নতিতে দ্বিতীয় মাস্টার্স (বিদেশি)/এমফিল/পিএইচডি ডিগ্রী থাকা বা না-থাকার বিষয়ে দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিধি প্রণয়ন নিশ্চিতকরণ, শিক্ষা ছুটি সবেতনে চার বছর থেকে পাঁচ বছরে উন্নীতকরণসহ পূর্ণাঙ্গ শিক্ষাছুটি বিধি প্রণয়ন, গবেষণা বা উচ্চশিক্ষার্থে ছুটিতে থাকা শিক্ষকবৃদ্ধের সকল সুবিধা অব্যাহত রাখা নিশ্চিতকরণ। উচ্চতর ডিগ্রির (বিদেশি দ্বিতীয় মাস্টার্স/এমফিল/পিএইচডি) জন্য ইনক্রিমেন্ট প্রাপ্তির বাস্তবসম্মত নীতিমালা প্রণয়ন, নিয়মিত শিক্ষাকার্যক্রমের ব্যাঘাত না ঘটিয়ে গুণগতমান বজায় রেখে সান্ধ্যকালীন প্রোগ্রাম পুনঃচালুকরণ, শিক্ষকদের গবেষণার সুযোগ বৃদ্ধিতে গবেষণা ভাতা প্রদান এবং কনফারেন্স, সেমিনার, সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহণের জন্য প্রণোদনা যৌক্তিক পর্যায়ে উন্নীতকরণ, শিক্ষকদের গবেষণার স্বীকৃতি ও উৎসাহ প্রদানের জন্য অ্যাওয়ার্ড প্রদানের ব্যবস্থাকরণ, বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে বাৎসরিক কনফারেন্স, সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম আয়োজন করার ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ইম্প্যাক্ট ফ্যাক্টর সম্পন্ন জার্নালে প্রকাশনার জন্য প্রণোদনার উদ্যোগ গ্রহণ, শিক্ষকদের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আর্থিক সহায়তা প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সরকার কর্তৃক প্রদত্ত বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত বৃত্তিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উল্লেখযোগ্য সুযোগপ্রান্তির ব্যবস্থাকরণ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ এর অসংগতিসমূহ দূর করে সংশোধিত আইন প্রণয়নে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ, অতীত চাকরিকাল গণনা, অবসর গ্রহণ, প্রভিডেন্ড ফান্ড, কল্যাণ ফান্ড বিষয়ক সংবিধি জরুরি ভিত্তিতে প্রণয়নের উদ্যোগ, আবাসিক ব্যবস্থা না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল রুটে দ্বিতীয় ও সান্ধ্যকালীন পরিবহনের ব্যবস্থাকরণ, শিক্ষক ডরমিটরীর পূর্ণাঙ্গ সুযোগসুবিধা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রদানের ব্যবস্থাকরণ, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য প্রবর্তিত স্বাস্থ্যবীমা দ্রুত চালুকরণ, শিক্ষকদের জন্য উন্নতমানের কাফেটেরিয়া ও ইনডোর গেমসের ব্যবস্থাকরণ, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকবৃন্দের আর্থিক দায় থাকলে তা হিসাব দপ্তর থেকে প্রতিবছর লিখিতভাবে অবহিতকরণ ও অডিট আপত্তি থাকলেতা নিষ্পত্তির ব্যবস্থাকরণ, এবং বার্ষিক বইভাতা সংক্রান্ত অডিট আপত্তি নিষ্পত্তিকরণ, গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তির প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে এ পদ্ধতি সম্পর্কে সম্মানিত শিক্ষকদের মতামতের ভিত্তিতে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে সকল শিক্ষকের যথাযথ সম্মানজনক অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ ত্বরান্বিতকরণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতকরণে কাজ করা হবে।
নীল দলের (জাকারিয়া-মোস্তফা) প্যানেল থেকে সভাপতি পদে পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক মোঃ আশরাফুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক পদে সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন নির্বাচন করছেন।