৫৯৪ দিন পর সশরীরে সহপাঠীর সঙ্গে ক্লাসে কুবি শিক্ষার্থীরা
করোনা মহামারীর কারণে দীর্ঘ ৫৯৪ দিন পর সশরীরে ক্লাসে ফিরেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) থেকে শ্রেণিকক্ষগুলোতে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা সশরীরে ক্লাসে অংশগ্রহণ করেন। এসময় শিক্ষার্থীদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠে ক্যাম্পাস।
দীর্ঘদিন পর ক্লাসে ফেরার অনুভূতি জানিয়ে লোক প্রশাসন বিভাগের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আনিকা তাসনিম সুপ্তি বলেন, দীর্ঘ ১৯ মাস পর আজ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হলো৷ গেইট দিয়ে ঢুকতেই শিক্ষার্থীদের আনাগোনায় আগের সেই প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পেয়েছি। ক্যাম্পাসের লাল বাস-নীল বাস দেখতেই ভীষণ ভালো লাগলো। সেই অভ্যস্ত পরিবেশে ফিরতে পেরে অদ্ভুত এক সুন্দর অনুভূতি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আর কখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে ক্লাস উপভোগ করতে পারব কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ছিলাম। সৃষ্টিকর্তার দোয়ায় অবশেষে সেই অনিশ্চয়তা ঘুচলো। আশা করছি সকলের সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে করোনা পূর্ববর্তী সেই সম্পূর্ণ প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসবে।
এর আগে গত ২৬ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮১তম সিন্ডিকেট সভায় ক্লাস শুরুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড মো. আবু তাহের বলেন, সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা ২৭ অক্টোবর আবাসিক হলগুলো খুলে দিয়েছি। আজ থেকে ক্যাম্পাস খুলছে। সবাইকে যথাযথ স্বাস্থ্য বিধি মেনে শ্রেণিকক্ষে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে এতদিন প্রাণহীন ক্যাম্পাসে দায়িত্ব পালন করে গেছি। যারা বিদ্যাপীঠের প্রাণ আজ থেকে তারাও ফিরবে। এ আনন্দ অসাধারণ। পাশাপাশি আবাসিক হলগুলোর অবস্থা আমরা পর্যবেক্ষণ করেছি। আশা রাখব স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা পুনরায় ক্লাসে ফিরবে এবং জ্ঞানচর্চায় মনোনিবেশ করবে।
মঙ্গলবার সকালেই উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বিভিন্ন বিভাগে পরিদর্শনে যান। এসময় তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পর আজ সশরীরে ক্লাস শুরু হয়েছে, আমি সকালেই বিভাগগুলো পরিদর্শন করেছি গিয়েছি। আমরা শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে সর্তক রয়েছি। ছাত্র পরামর্শক কার্যালয়ের পরিচালককে এ বিষয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছরের ১৮ মার্চ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৩ দফায় সশরীরে চূড়ান্ত পরীক্ষা নিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। সর্বশেষ অনলাইন মাধ্যমে এবং সশরীরে শুরু হওয়া পরীক্ষা চালিয়ে আসছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।