তিতুমীর কলেজের আবাসিক হল খুলবে আগামী সপ্তাহে
রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের আবাসিক হল আগামী সপ্তাহে খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কলেজের হলের দায়িত্বে থাকা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক কাজী মোহাম্মদ আল-নুর। তিনি বলেন, “যদি সবকিছু ঠিক থাকে তবে, আগামী সপ্তাহেই আমরা হলগুলো খুলে দিতে চাই।”
মঙ্গলবার রাতে প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে হলের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক জানান, “তারা কোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে চাননা। সার্বিক দিক বিবেচনা করেই সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
আল-নুর বলেন, “আমরা আগামী শনিবার অথবা রবিবার হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের তুলতে চাই। তবে, আমাদের কিছুটা দেরি হচ্ছে চলমান সংস্কার কাজের জন্য। আমাদের পানির সংযোগসহ অন্যান্য কিছু সংস্কারের কাজ চলছে। দীর্ঘ দুইবছর এগুলো ব্যবহৃত না হওয়ায় কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছে।”
সংস্কার কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীরা হলে উঠতে পারছেনা বলার পর সংশ্লিষ্ট কাজ শুরু করেছেন। তারা দ্রুত কাজ শেষ করবেন বলে আমাদের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। আমরা আশা করছি, দুই-একদিনের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে যাবে।”
টিকা নিয়ে হলে উঠতে হবে
টিকা নিয়ে শিক্ষার্থীদের হলে উঠতে হবে বলে জানিয়েছেন হলের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক কাজী নুর। তিনি বলেন, “করোনাকালে আমরা শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির মুখে ফেলতে চাইনা। আমরা অন্তত একডোজ টিকা নেওয়া শিক্ষার্থীদের আগে হলে তোলার বিষয়ে ভাবছি। কিন্তু তারপরেও সকলে যেহেতু একবারে টিকা পাচ্ছে না, আমরা শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রশন দেখেও তাদের হলে তোলার বিষয়টি ভাবছি।”
তিতুমীর কলেজের নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করা তালাত সুলতানা বলেন, “আমরা কলেজের আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার কথা ভাবছি। তবে, এখনি ঠিক করে কিছু বলা যাচ্ছেনা। আমরা আশা করি এই মাসের শেষ দিকে অর্থ্যাৎ আগামী সপ্তাহেই এটি খোলা হতে পারে। তবে, যদি কোনো কারণে মহামারির সংক্রমণ বেড়ে যায় তখন বিকল্প চিন্তা করতে হবে।”
টিকা নিশ্চিত করে শিক্ষার্থীদের হলে তোলা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এখন তো টিকার রেজিস্ট্রেশন করা সহজ। শিক্ষার্থীরা চাইলে টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করে টিকা নিতে পারে। আমরা টিকা দেওয়া শিক্ষার্থীদের আগে হলে তোলার কথা ভাবছি।
অধ্যক্ষ তালাত সুলতানা জানান, যেসব শিক্ষার্থীর পরীক্ষা চলমান এবং টিকার অন্তত এক ডোজ সম্পন্ন হয়েছে তারা সবার আগে হলে উঠতে পারবেন।
তিনি বলেন, “আমরা চাই যাদের পরীক্ষা চলছে তারা যাতে আগে হলে উঠতে পারে। তাছাড়া যাদের টিকার দুই ডোজ সম্পন্ন হয়েছে তাদের হলে উঠতে বাধা নেই। এরপর যারা একডোজ সম্পন্ন করেছেন তাদের তোলা হবে। সর্বশেষ যারা রেজিস্ট্রেশন করেছেন তাদের হলে তোলার কথা ভাবছি আমরা।”
সরকারি তিতুমীর কলেজে তিনটি আবাসিক হলের মধ্যে বর্তমানে ছেলেদের জন্য রয়েছে একটি আবাসিক হল। মেয়েদের জন্য বাকি দুইটি। এছাড়া এই কলেজেই আরো দুইটি আবাসিক হলের কাজ চলমান। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় এসব কাজ হচ্ছে। তাছাড়া ছেলেদের আক্কাসুর রহমান আঁখি হলটির সংস্কার কাজ চলমান।
মেয়েদের দুইটি হল সুফিয়া কামাল ছাত্রীনিবাস এবং সিরাজ ছাত্রীনিবাস। অপর একটি ছাত্রীনিবাসের কাজ চলছে।
অধ্যক্ষ বলেন, “আমাদের হলের কিছু কাজ চলমান। আমরা দ্রুতই এসব কাজ শেষ করে শিক্ষার্থীদের হলে তোলার চেষ্টা করছি।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে ৫ অক্টোবর। কিন্তু এর অধিভুক্ত হওয়া শর্তেও কেনো সরকারি তিতুমীর কলেজের আবাসিক হল খুলছে না এমন প্রশ্নের জবাবে কলেজটির অধ্যক্ষ বলেন, “সবকিছু তাদের মতো হতে হবে এমন কেনো বিষয় নেই। আমাদের এটা কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ও না। আমরা চেষ্টা করছি। দ্রুতই হল খুলে দেওয়া হবে।”