কুবিতে সিনিয়রের নাম ধরে ডাকায় ছাত্রলীগের ১০ কর্মী আহত
এক সিনিয়রের নাম ধরে ডাকাকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রিয়াজুল ইসলাম বাঁধন তার নিজের রুমে অর্থনীতি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তানজিম আহমেদ সোহাগের নাম ধরে ডাকেন।
এসময় ঐ রুমে থাকা সোহাগের বন্ধু ওয়াকিল বিষয়টি শুনে ছাত্রলীগকর্মী বাঁধনকে হলের ২০০৩ নং রুমে ডেকে নিয়ে যান। এসময় ওয়াকিলের সঙ্গে আরও ছিল ১২তম ব্যাচের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শাফী, সোহাগ। সেখানে কথা বলার এক পর্যায়ে তারা বাঁধনকে চড় মারেন বলে অভিযোগ করেন বাঁধন। এ ঘটনার পর বাঁধন তার বন্ধুদের বিষয়টি জানালে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ১৪তম ব্যাচের শাফীকে ডেকে এলোপাথাড়ি মারধর করেন ১৩তম ব্যাচের হানিফ, সাদমান, মিরাজ, রবিনসহ ৮-১০ জন।
পরে শাফী মারধরের বিষয়টি হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের জানলে তারা ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদেরকে ৩০৩নং রুমে ‘বিচারের জন্য’ ডেকে নিয়ে যান। ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা জানান, তাদেরকে প্রথমে সেখানে একদফা মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এর কিছু সময় পরে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদের রুমে (৩০১) ডেকে নিয়ে ফের আধাঘন্টা ধরে তাদেরকে মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতারা।
দুই দফা মারধরে আহত হয়েছেন ১৩তম ব্যাচের অন্তত ৮-৯ জন।
সিনিয়রকে প্রথমে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেছে ১৩তম ব্যাচের ছাত্ররা। ঐ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগকর্মী হানিফ ভূইয়া বলেন, আমাদের বন্ধুকে মারধরের বিষয়ে জানতে তাদের (১৪ তম ব্যাচ) রুমে যাই। তবে সেখানে আমরা কাউকে আঘাত করিনি।
তবে ১২তম ব্যাচের শাফি হাসান দাবি করেন, হলের সিনিয়র হিসেবে জুনিয়রদের আচরণের বিষয়ে বলার কারণে জুনিয়ররা আমাকে বেধড়ক মারধর করে।
আর বিচারের নামে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেছে ছাত্রলীগ নেতারা। এ বিষয়ে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাফিউল আলম দীপ্ত বলেন, হলের অভ্যন্তরীণ একটি বিষয়ে ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সাথে ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের উচ্চাবাক্য বিনিময় হয়। আমিসহ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বসে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছি।
মারামারির ঘটনায় জড়িত সবাইকে হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী দাবি করে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদ বলেন, নিজেদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি থেকে হাতাহাতি হয়েছে। আমরা সিনিয়রদের সাথে বসে বিষয়টি সমাধান করেছি। পরবর্তীতে সভাপতির সাথে কথা বলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এবিষয়ে জানতে চাইলে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রোভোস্ট ড. মোহাম্মদ জুলহাস মিয়া বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। এটি হলের অভ্যন্তরীণ বিষয়, আমরা বসে বিষয়টি সমাধান করে দিব।
আর প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন জানান, আবাসিক হলের বিষয়গুলো প্রোভোস্ট দেখভাল করেন। তবে হল প্রোভোস্ট প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দিলে তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।