১৩ অক্টোবর ২০২১, ০০:১৬

ফের আন্দোলনে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন  © ফাইল ফটো

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কাটার ঘটনায় আত্মপক্ষ সমর্থনে সাক্ষ্য দিতে তদন্ত কমিটি অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে আবারও সময় দিলেন। এ দফায় তিনি আগামী ২১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় পাচ্ছেন। 

মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত তদন্ত কমিটির সব সদস্যের জরুরি আলোচনা শেষে সময় বাড়াতে কমিটির প্রধান সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করেন। প্রাথমিকভাবে এ আবেদনে অনুমোদন দেন উপাচার্য আব্দুল লতিফ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সোরহাব আলী।

এদিকে, তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশে বিলম্ব হওয়ায় ফের আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক ভবনের ফটক আটকে ভেতরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দুই সপ্তাহের সময় চেয়ে গত এক সপ্তাহ আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ই-মেইলে লিখিত আবেদন করেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই শিক্ষক ফারহানাকে সময় বাড়িয়ে সুযোগ দেওয়া হলো। আগামী ২১ অক্টোবরের মধ্যেই তাকে সশরীরে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনে উপযুক্ত সাক্ষ্য বা বক্তব্য দিতে হবে। এটাই চূড়ান্ত বর্ধিত সময় বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে।

গত ২৬ সেপ্টেম্বর শিক্ষক ফাহানার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের চুল কাটার অভিযোগ ওঠার পরদিন তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপর ফারহানাকে আত্মপক্ষ সমর্থনে সাক্ষ্য দিতে এরই মধ্যে দু'দফা সময় দিয়ে ই-মেইলে ও ডাকযোগে চারটি পত্র দেয় তদন্ত কমিটি। গত ৭ অক্টোবর পর্যন্ত চূড়ান্ত সময় দিলেও শেষ পর্যন্ত তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হননি শিক্ষক ফারহানা। তিনি অসুস্থতা ও প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণ দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ই-মেইলে দুই সপ্তাহের সময়ের আবেদন করেন।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে শিক্ষক ফারহানার বহিস্কারের দাবিতে তাদের আন্দোলন মাঝপথে শিথিল হলেও গত ১৫ দিনে তদন্ত কার্যক্রম শেষ না হওয়ায় তারা আবার মাঠে নেমেছেন। মঙ্গলবার রেজিস্ট্রারের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ না পেয়ে বাধ্য হয়ে এ ধরনের পদক্ষেপ নেন বলে আন্দোলনকারীদের মুখপাত্ররা জানান।

মঙ্গলবার দুপুরে একাডেমিক ভবনের গেট আটকে আন্দোলনের সময় তদন্ত কমিটির সদস্যরা ভেতরে আলোচনায় ছিলেন। একই ভবনের অন্য কক্ষে ছিলেন রেজিস্ট্রার। সন্ধ্যা পর্যন্ত সবাই ছিলেন অবরুদ্ধ। সন্ধ্যার পর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নানাভাবে আশ্বস্ত করে বাড়ি বা মেসে পাঠিয়ে দেন শিক্ষকরা।

আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র শামিম হোসেন বলেন, তদন্ত কার্যক্রম ও বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার জন্য গত মাসের ৩০ তারিখ থেকেই শিক্ষক ফারহানা টালবাহানা করে আসছেন। বিশ্ববিদ্যায়ের ৪৩ ধারার ৬-এর উপধারা অনুযায়ী আমরা তার বিচার চেয়েছি। তিনি তিন বছর ধরে কারণে-অকারণে শিক্ষার্থীদের অমানুষিক নির্যাতন করছেন। তার বিচার চাওয়াটা আমাদের অধিকার। এটি বিশ্ববিদ্যালয় বা সরকারবিরোধী কোনো কাজ না।

উপাচার্য আব্দুল লতিফ বলেন, সময় না দিলে শিক্ষক ফারহানা উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয়ে শেষ পর্যন্ত পুরো তদন্ত বা বিচার প্রক্রিয়াটাই ঝুলিয়ে দেওয়ার সুযোগ নিতে পারেন। এ জন্যই তাকে সময় দেওয়া হয়েছে।