সাত কলেজ: চূড়ান্ত পরীক্ষায় সময় কমলেও কমেনি প্রশ্নের সংখ্যা
স্নাতকের চূড়ান্ত পরীক্ষার সময় কমানো হলেও মানবণ্টনে নম্বরের সামঞ্জস্যতা না থাকায় বেশ বিপাকে পড়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত ৪ ঘণ্টা সময় কমিয়ে ২ ঘণ্টা করা হলেও সেই অনুপাতে প্রশ্নের সংখ্যা কমানো হয়নি। যার ফলে, প্রশ্নের উত্তর জানা থাকলেও সময় স্বল্পতার জন্য পূর্ণ নম্বরের উত্তর দিতে পারছেন না অধিকাংশ শিক্ষার্থী।
জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয়েছে চলতি মাসের ২ তারিখ। অনার্স ৩য় বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয়েছে চলতি মাসের ৪ তারিখ। করোনার জন্য সংক্রমণ রোধে পরীক্ষার সময় কমিয়ে আনা হয়েছে অর্ধেকে। ৮০ নম্বরের ৪ ঘণ্টার পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে ২ ঘণ্টায়। আর ৩ ঘণ্টার পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে দেড় ঘণ্টায়। এসব পরীক্ষার মানবণ্টন পরিবর্তন এনে প্রশ্নপ্রতি নম্বর বাড়ানোর কথা থাকলেও আগের মতই বেশি প্রশ্ন থাকছে প্রশ্নপত্রে। যার ফলে পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থীরা সময় সংকুলান না হওয়ায় পূর্ণ নম্বরের উত্তর প্রদান করতে পারছেন না।
এমন অবস্থায় শিক্ষার্থীরা বলছে, পরীক্ষা যেহেতু সশরীরেই হচ্ছে তারা পূর্বের সময় অনুযায়ী চারঘন্টায় পরীক্ষা দিতে চান। এছাড়াও পরীক্ষার সময় অনুযায়ী প্রশ্ন সংখ্যা বেশি হওয়ায় শিক্ষার্থীরা চরম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।
ইডেন মহিলা কলেজের ১ম বর্ষের (২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষার্থী ফারজানা ফারিহা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম চূড়ান্ত পরীক্ষা দিচ্ছি, নতুন সব বিষয় নিয়ে পড়ছি। নতুন মানবণ্টনে পরীক্ষা দিচ্ছি। আগের ৪ ঘণ্টায় ৮০ নম্বরের পরীক্ষা এখন মাত্র ২ ঘণ্টায় দিচ্ছি। প্রশ্নও বেশ মানসম্মত এবং মন মতোই হচ্ছে। অথচ সময় স্বল্পতার কারণে উত্তর লিখতে পারছি না। পরীক্ষার হলে যুদ্ধ করছি রীতিমতো। তবুও লিখে শেষ করা যাচ্ছে না। সব প্রশ্ন কোনও রকমে লিখতে পারলেও মানসম্মত উত্তর লিখে আসতে পারছি। না। এটা একটা বিশাল ভোগান্তি।
ইয়াসিন আরাফাত নামের ঢাকা কলেজের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, খাতা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে কি করবে সেটা নিয়ে আমরা সন্দিহান। কারণ প্রশ্নে যা চাচ্ছে তার উত্তর লিখতে গেলে ২ ঘণ্টা কখনোই পর্যাপ্ত সময় না। কীভেবে ৮০ নম্বরের পরীক্ষা ২ ঘণ্টায় শেষ করা সম্ভব? ১ম বর্ষে ফলাফল খারাপ হলে ভালো সিজিপিএ নিয়ে গ্রাজুয়েট হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করা দুষ্কর। শিক্ষকরা কী আমাদের খাতা যথার্থ মূল্যায়ন করবেন? আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ ধরনের প্রহসনের অবসান চাই।
এবিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের প্রধান সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘সাত কলেজের স্নাতক পরীক্ষার সময় অধ্যক্ষদের সাথে বসে আলোচনা করেই নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত আমরা কোনো অভিযোগ পাইনি। যদি কোন সমস্যা হয় তবে তা সাত কলেজের অধ্যক্ষদের মাধ্যমে আমাদের কাছে আসতে হবে।’
বিষয়টি সুরাহার জন্য চেষ্টা চলছে জানিয়ে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ ও সাত কলেজের সমন্বয়ক অধ্যাপক আইকে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, বিষয়টি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা কমিটির মিটিং চলছে। মিটিং শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।