চুল কাটার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার চেষ্টা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৪৩ AM , আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৪৩ AM
শিক্ষকের নির্দেশে মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র।
আত্মহত্যার চেষ্টাকারী নাজমুল হাসান তুহিন (২০) বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র। তার বাড়ি মাগুরা জেলায়।
তুহিনের সহপাঠীরা জানায়, সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে ঘুমের বড়ি খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তুহিন। বিষয়টি টের পেয়ে সহপাঠীরা তাকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় প্রথমে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখান থেকে তাকে রাতেই এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. মনোয়ার হোসেন সুজন বলেন, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
জানা যায়, গত রবিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের ইয়ার চেঞ্জ ফাইনাল পরীক্ষা দিতে হলে প্রবেশ করছিল শিক্ষার্থীরা। এসময় ওই বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন কাঁচি দিয়ে ১৪ জন পরীক্ষার্থীর মাথার সামনের অংশের বেশ কিছু চুল কেটে দেন।
আরও পড়ুন: ১৪ ছাত্রের চুল কেটে দিলেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর
এ ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লাঞ্ছিত পরীক্ষার্থী ও তাদের সহপাঠীরা ওই বিভাগের বাংলাদেশের ইতিহাস বিষয়ের পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন। কিন্তু এসময় বিভাগের চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন ও তার সহকর্মীরা শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে করে সবাইকে পরীক্ষার হলে যেতে বাধ্য করেন।
এসব ঘটনা নিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান তুহিন ফেসবুকে একটি স্টাটাস দেন।
তুহিনের সহপাঠীরা জানান, ফেসবুক স্টাটাস দেয়ার কারণে গতকাল দুপুরেই তুহিনকে ডেকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেন বিভাগের চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন। এ অপমান সইতে না পেরে রাতে তুহিন শাহ মুখদুম ছাত্রাবাসের ৫ম তলার নিজ কক্ষে ৩৫টি ঘুমের বড়ি এক সঙ্গে খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
এদিকে আত্মহত্যার চেষ্টার খবর ছড়িয়ে পড়লে সোমবার রাত ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসে ভিড় করেন। এ সময় তারা এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দোষী ওই শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। এসময় সেখানে উপস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সোহরাব আলী ও অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।