৫ শিক্ষক নিয়েই চলছে কুবির আইন অনুষদ
আন্তর্জাতিকভাবে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাতের নূন্যতম মানদন্ড ধরা হয় ১:২০। অর্থাৎ প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য অন্তত একজন শিক্ষক থাকতে হবে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও এ মানদন্ড অনুসরণের জন্য উৎসাহ দিয়ে আসছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশিন (ইউজিসি)। তবে এ মানদন্ডের ধারে কাছেও নেই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আইন অনুষদভুক্ত আইন বিভাগ। আইন বিভাগে প্রতি ৫৩ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক মাত্র ১ জন। শিক্ষার্থী অনুপাতে শিক্ষক কম হওয়ায় চাপ পড়ছে বর্তমান শিক্ষকদের উপর। ক্লাস, পরীক্ষা ও ফলাফল প্রকাশে হিমশিম খেতে হয় শিক্ষকদের। এছাড়া বিভিন্ন ধরণের একাডেমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে আইন অনুষদের অধীনে যাত্রা শুরু করে আইন বিভাগ। বর্তমানে বিভাগটিতে মোট ৫টি ব্যাচে শিক্ষার্থী রয়েছেন ২৬৫ জন। এর বিপরীতে শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ৫ জন। উচ্চশিক্ষায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাতের আন্তর্জাতিক মানদন্ড থেকে অনেক পিছিয়ে এ বিভাগটি। ফলে বাড়তি চাপ পোহাতে হয় বর্তমান শিক্ষকদের। এছাড়া কোন শিক্ষক শিক্ষাছুটিতে গেলে সংকট আরও প্রকট হয়। শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষার্থীরাও বিভিন্ন একাডেমিক জ্ঞান থেকে বঞ্চিত হন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। এছাড়াও ফলাফলে দেরি হওয়া এবং নির্ধারিত সময়ে ক্লাস শেষ করতে না পারারও অভিযোগ রয়েছে।
আইন বিভাগের ১ম ব্যাচের শিক্ষার্থী আরিফ আহমেদ বলেন, ‘শিক্ষক বেশি হলে কোর্সগুলোর ক্ষেত্রে শিক্ষকরা স্পেশালাইজড থাকেন। একটি কোর্স অনেকদিন পড়ানোর কারণে অভিজ্ঞতা বেড়ে যায়। কিন্তু আমাদের শিক্ষক সংকট থাকার কারণে একজন শিক্ষককে একইসাথে বেশ কয়েকটি কোর্স পড়াতে হয়। এতে করে আমরা পর্যাপ্ত ক্লাস থেকে বঞ্চিত হই। আমাদের রেজাল্ট আসতে দেরি হয়। পরীক্ষা নিতে দেরি হয়। যদি শিক্ষক বেশি হতেন তাহলে এ সমস্যাগুলোতে পড়তে হতো না।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আইন বিভাগের একজন শিক্ষক বলেন, শিক্ষক কম হওয়ায় আমাদেরকে অনেক প্রেশার নিতে হয়। আমাদের ৫টি ব্যাচে শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ৫ জন। করোনার কারণে একটি ব্যাচ এখনও অপেক্ষমান। তাহলে ৬ ব্যাচে ৫ জন হতো। করোনার কারণে আর নেয়া হয়নি। তবে ৩ জনও পর্যাপ্ত নয়। করোনার কারণে কেউই শিক্ষাছুটিতে যায়নি। শিক্ষাছুটিতে গেলে তো আরও সংকট দেখা দিত।’
আইন অনুষদের ডিন ড. রশিদুল ইসলাম শেখ বলেন, আইন বিভাগে শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। আমরা কর্তৃপক্ষকে বারবার এ বিষয়টি জানিয়েছি। তারা শুধু আশ্বাসই দিয়েছে। দ্রæত শিক্ষক সংকট নিরসন করা জরুরি।
রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, আমি ২ দিন আগেও উপাচার্য স্যারের সাথে কথা বলেছি এ বিষয়টি নিয়ে। একটি সার্কুলার আগেই দেয়া হয়েছে। কিন্তু করোনার কারণে নিয়োগ দেয়া হয়নি। আশা করি দ্রæতই সমাধান হবে।