কর্তৃপক্ষ চাইলে ১২ সেপ্টেম্বর থেকেও খুলতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়: শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু  © ফাইল ফটো

করোনা সংক্রমণ নিম্নমুখী হওয়ায় দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধের পর আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। ওই দিনই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও (বিশ্ববিদ্যালয়) খুলে দেওয়া যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আজ শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) চাঁদপুরের মহামায়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সিন্ডিকেট এবং অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল চাইলে অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গেই উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাগুলো খুলে দিতে পারে। 

তিনি বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অর্থাৎ প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দিতে পারবো। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিষয়ে আমরা আবারও বসবো। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর সিন্ডিকেট এবং অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল নেবে। আমরা উপচার্যদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তারা চেয়েছিলেন যে, অন্ততপক্ষে সব শিক্ষার্থী প্রথম ডোজ টিকা নিতে পারলে ভালো হয়। সে অনুযায়ী অক্টোবরের মাঝামাঝি বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এখন আবার তাদের সঙ্গে কথা বলবো। তারা যদি অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একই সঙ্গে খুলতে রাজি হলে খুলবেন কিংবা ওনারা ভিন্ন কোনও তারিখও নির্ধারণ করে নিতে পারেন।

ডা. দীপু মনি বলেন, আমরা প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের দুই মন্ত্রণালয় মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। গতকাল আমাদের জাতীয় পরামর্শক কমিটির সঙ্গে সভা করেছি। ৫ সেপ্টেম্বর আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে। এমনকি স্কুল খুলে দেওয়ার পরে আমাদের দৈনিক বাধ্যতামূলক একটি প্রতিবেদন পাঠানোর বিষয় রয়েছে। যেন খুব কঠোরভাবে আমরা মনিটরিং করতে পারি। যাতে স্কুল, কারিগরি, মাদ্রাসার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি সকলে মেনে চলে।

তিনি আরও বলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিক্ষক-কর্মচারীদের টিকাদান এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আগে বলেছিলেন ১৮ বছরের বেশি যারা তাদেরকে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে। এখন তিনি বলেছেন ১২ বছরের বেশি যারা তাদেরকেও টিকা দেওয়ার কাজ শুরু করতে। যেহেতু সব টিকা ১২ বছর বয়সীদের দেওয়া যায় না। কাজেই যে টিকাগুলো দেওয়া যায় সে টিকাগুলো সরকার আনার ব্যবস্থা করছে। আমরা সেগুলো পর্যায়ক্রমে দেবো। তবে এখন আশা করছি ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দিতে পারবো।

এর আগে গত ২৬ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক সভায় পরিকল্পনা করা হয়েছিল, টিকা দেওয়া সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেরা আগামী ১৫ অক্টোবরের পর থেকে খুলতে পারবে। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রমতে, ১৫ অক্টোবরের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার যে পরিকল্পনা করা হয়েছে, সেটি আলোচনা সাপেক্ষে পরিবর্তিতও হতে পারে। অর্থাৎ এগিয়ে আসতে পারে। অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষা বিষয়ে নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেয়।

২৬ আগস্টের ওই সভায় উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ ৫ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে নামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যায় কি না, সে বিষয়ে করোনাসংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির পরামর্শ চাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেই সিদ্ধান্ত চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রাতে বৈঠকে বসে কারিগরি কমিটি। সেখানেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পক্ষ মত উঠে আসে।


সর্বশেষ সংবাদ