‘ঝুঁকিপূর্ণ’ মনে হলে ৮ মাস পর পরীক্ষা দেওয়ার পরামর্শ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজের সশরীরে পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে। গত বুধবার (১৮ আগস্ট) সাত কলেজের প্রধান সমন্বয়কারী ও ঢাবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সঙ্গে সাত কলেজের অধ্যক্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভা শেষে সশরীরে পরীক্ষা শুরুর সিদ্ধান্ত ও সার্বিক অবস্থা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন সাত কলেজের সমন্বয়ক ও ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আইকে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, ‘‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত ঢাকার সরকারি ৭ কলেজের স্থগিত পরীক্ষাসমূহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে সশরীরে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফরম ফিলআপ হয়েছে এমন পরীক্ষাসমূহের রুটিনও ২/৩ দিনের ভেতর ঘোষণা হবে। যত দ্রুত সম্ভব সকল পরীক্ষা শেষ করা হবে।
তিনি লিখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের পূর্বে গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৪ ঘন্টার পরীক্ষা ২ ঘন্টায় নেয়া হবে। ১ম ও ২য় বর্ষে যারা ৩ বিষয়ে ফেল করেছে,তাদের শর্ত সাপেক্ষে পরবর্তী শ্রেণিতে উর্ত্তীর্ণ করার সিদ্ধান্ত হয়। আগামী রবিবার ৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের তালিকা টিকার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকট হস্তান্তর করা হবে।
পড়ুন: সেপ্টেম্বরে সশরীরে শুরু সাত কলেজের চূড়ান্ত পরীক্ষা
স্ট্যাটাসটি রবিবার (২২ আগস্ট) রাত ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি প্রতিক্রিয়া এবং আড়াইশর মত কমেন্ট ও ১৭০ জন শেয়ার করেছেন।
তবে ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষের ওই ফেসবুক স্ট্যাটাসের একটি কমেন্টকে ঘিরে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সিরাজুল ইসলাম সজীব নামের এক শিক্ষার্থী কমেন্টে লিখেন, ‘স্যার যত দ্রুত সম্ভব সব পরীক্ষার রুটিন দিয়ে দিয়েন। আমরা যারা দূর থেকে এসে ঢাকা মেস ভাড়া করবো তাদের সুবিধা হবে। আগের বছরেও এমন সিদ্ধান্ত শুনে ঢাকা বাসা ভাড়া করার পরে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত বাতিল হয়। একটা বাসা ভাড়া করা সহজ কাজ নয়। সে সাথে টাকার।’
প্রতি উত্তরে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ লিখেন, ‘আজ হতে দিন গুনে বাসা ঠিক কর। করোনা কারো সাথে কথা বলে আসে না, ওটাই সমস্যা।’
ওই কমেন্টে ফয়সাল আহমেদ নামের আরেক শিক্ষার্থী লিখেন, ‘স্যার আমাদের ভ্যাকসিনের আওতায় না এনে সশরীরে পরীক্ষা নেওয়াটা কতোটুকু যৌক্তিক বলে মনে হয় আপনার কাছে? ঢাবিসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেখানে অনলাইনে পরীক্ষা নিচ্ছে আপনারা কেন সশরীরে নিচ্ছেন? ঢাবির শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মানা হলো আর আমাদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছেন এটা কতোটুকু নৈতিক মনে হচ্ছে আপনার কাছে?’
এরপর অধ্যক্ষ ওই শিক্ষার্থীকে উদ্দেশ্য করে লিখেন, ‘ঝুঁকিপূর্ন মনে করলে অবশ্যই অপেক্ষা করতে হবে। বাঁচলেই তো তবে পরীক্ষা। এ পরীক্ষা শেষ হলে ৭/৮ মাস পর আবার পরীক্ষা হবে বলে আশা করছি। সাবধানে ও নিরাপদে থেকো।’
এরপর থেকেই অধ্যক্ষের এই মন্তব্য ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হয়ে টিকার ব্যবস্থা না করে ও হল না খুলে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থী যে সব ধরনের সমস্যার পড়েছে তার প্রতি উত্তরে এমন কথা তিনি কিভাবে বলেন!
ওই মন্তব্যগুলোর স্ক্রিনশট ইতমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে। অধিকাংশ শিক্ষার্থীই এতে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন।