০৪ আগস্ট ২০২১, ১২:৫৮

৮ মাসে সেশন শেষের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের

সাত কলেজ  © লোগো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত রাজধানীর সরকারি সাত কলেজে সেশনজট কমাতে নির্ধারিত সময়ের আগেই শিক্ষাবর্ষ শেষ করার পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ৮ মাসে সেশন শেষ করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি এখন শিক্ষার্থীদের। যদিও গত জুলাই মাসে শিক্ষাবর্ষের সময় সংক্ষিপ্ত করে সেশন শেষ করার পরিকল্পনার গ্রহণের কথা জানিয়েছিলেন অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের সমন্বয়ক ও ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আইকে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার। কিন্তু এরপর থেকে আজ অবধি দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও এ সিদ্ধান্ত আলোর মুখ দেখেনি।

সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেছিলেন, ‘করোনার ক্ষতি কমাতে ও সাত কলেজের পূর্ব থেকেই বিদ্যমান সেশনজট কাটিয়ে উঠতে সেশন সংক্ষিপ্ত করার বিষয়টি আমরা ভাবছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বছরভিত্তিক সেশনকে আট মাস করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে সাত কলেজেও আমরা সেটি কার্যকর করবো। এছাড়াও আমাদের আগে থেকেই কোর্সের সময় কমিয়ে আনার বিষয়ে পরিকল্পনা ছিল। আমরা সাত কলেজ কো-অর্ডিনেশন করে আট মাসের মধ্যে কোর্স শেষ করার চেষ্টা করবো । শিক্ষার্থীদের কোর্স শেষের বিষয়ে আপত্তি না থাকলে আট-নয় মাসের মধ্যে পরীক্ষাও নিয়ে নিব।’

এমন ঘোষণার দীর্ঘদিনেও অগ্রগতি নেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের। এমনকি এই গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হবে কিনা কিংবা বাস্তবায়িত হলে কি পরিকল্পনার মাধ্যমে এটি বাস্তবায়ন করা হবে তার বিস্তারিত রূপকল্প সম্পর্কে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য জানাতে পারেনি সাত কলেজ প্রশাসন।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে যদি শিক্ষাবর্ষ সংক্ষিপ্ত করার চূড়ান্ত ঘোষণা এবং পরিকল্পনা প্রণয়ন ও প্রকাশ করা না যায় তবে বড় ধরনের ক্ষতির মুখোমুখি হবেন তারা। এছাড়াও করোনা মহামারি সংক্রমণ রোধে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পূর্ব থেকেই বিদ্যমান সেশনজট নতুন রূপ পেয়েছে বলেও অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী মাহমুদ সোহাগ বলেন, সেশনজট নিরসনে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে এবং সময় সংক্ষিপ্ত করে দ্রুত বর্ষ সমাপনী পরীক্ষা সম্পন্ন করার রূপরেখা প্রণয়ন এর দাবি জানাচ্ছি। কেননা এখন পর্যন্ত অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। আমরা চাচ্ছি না নতুন করে আমাদের আরও সময় নষ্ট হোক।

শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তের দিকেই তাকিয়ে নয় বরং কলেজ প্রশাসন যেন নিজ উদ্যোগেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সচেষ্ট হন এমন দাবি করেন ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী তাসমিয়া তারন্নুম। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার পদ্ধতি এবং তাদের বিভাগের শিক্ষার্থী সংখ্যা কম হওয়ায় তারা চাইলেই যে কোন সিদ্ধান্ত দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে পারে। কিন্তু সাত কলেজের বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থী হওয়ায় এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আগে থেকেই কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা না গেলে এটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না যার ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষতির মুখোমুখি হতে হয়।

এ বিষয়ে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ ও সাত কলেজের সমন্বয়ক অধ্যাপক আইকে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, সেশন সংক্ষিপ্ত করার সিদ্ধান্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের। যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয় তাহলে আমাদের ক্ষেত্রেও সেটি হবে। তবে আমরা চাইছি পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত পরীক্ষা দ্রুততম সময়ের মধ্যে। গ্রহণ করার।

তবে সাত কলেজে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের সক্ষমতা রয়েছে কিনা সেটি বিবেচনা করে অধ্যক্ষরা জানালে সে আলোকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও সরকারি সাত কলেজের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল। এছাড়াও আগামী ৫ আগস্টের পর সাত কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে মিটিংয়ের সার্বিক বিষয়ে বিস্তারিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।