নাগরিক শ্রেণীর টিকা নিচ্ছেন জবি শিক্ষার্থীরা
নাগরিক শ্রেণী (তদুর্ধ্ব-৩৫) ক্যাটাগরিতে রেজিস্ট্রেশন করে করোনার টিকা নিচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বহুল আকাঙ্ক্ষিত এই টিকা নিতে পেরে স্বস্তি প্রকাশ করছেন তারা। তবে ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী’ ক্যাটাগরিতে না হয়ে নাগরিক শ্রেণীতে শিক্ষার্থীদের তথ্য আপলোড হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থীই রেজিস্ট্রেশনের সঠিক নিয়ম জানে না।
জানা যায়, টিকা প্রাপ্তির জন্য গত ৩ জুন এনআইডি কার্ডধারী শিক্ষার্থীদেরকে যাবতীয় তথ্যসহ ১০ জুনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে নির্ধারিত লিংকে আবেদনের নির্দেশনা দেয় প্রশাসন। সেই ধাপে মোট ৯৪৫৪ শিক্ষার্থী টিকার জন্য আবেদন করে। তাদের তালিকা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। তবে এনআইডি কার্ডহীন শিক্ষার্থীদের বিষয়ে কোন সুস্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় বিড়ম্বনায় পড়ে তারা।
এরপর গত ১ জুলাই ইউজিসির এক বিজ্ঞপ্তিতে আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকার রেজিস্ট্রেশনের জন্য আহ্বান করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হয়েও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তালিকা চাওয়া হয়। পুনরায় তথ্য চাওয়ার পর নানা ধরনের সমন্বহীনতায় বিড়ম্বনায় শিকার হয়েছে শিক্ষার্থীরা।
পরে গত ১৩ জুলাই জানা যায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ডাটা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ক্যাটাগরিতে আপলোড না হয়ে নাগরিক শ্রেণী (তদুর্ধ্ব-৩৫) ক্যাটাগরিতে আপলোড হয়েছে।
শুরুতে এ ক্যাটাগরিতে আবেদন করতে না পারলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রচেষ্টায় বিষয়টি সমাধান হয়। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীই নাগরিক শ্রেণীতে রেজিস্ট্রেশন করে নিজ নিজ জেলা-উপজেলা ও অন্যান্য কেন্দ্রে টিকা নিচ্ছে বলে জানা গেছে। অপরদিকে এখনো অনেকে সঠিক আবেদন প্রক্রিয়া না জানায় কিছুটা ভোগান্তিতে রয়েছেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী লিমা আক্তার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমে টিকার জন্য তথ্য দিয়েছিলাম। এরপর সুরক্ষা অ্যাপে নাগরিক শ্রেণী (তদুর্ধ্ব-৩৫) ক্যাটাগরি সিলেক্ট করে। এরপর ছাত্র-ছাত্রী শ্রেণী নির্ধারণ করে আবেদন করেছি। আবেদনের ১০ দিন পর মেসেজ পেয়ে টিকা কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নিয়েছি। টিকা নেওয়ার পর হালকা ব্যথা ছাড়া তেমন কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়নি। তবে টিকা নিতে পেরে ভালো লাগছে।
ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী বিনয় দেবনাথ বলেন, প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ে তথ্য দিয়েছিলাম। পরে যখন জানতে পারি নাগরিক শ্রেণীতে আমাদের তথ্য আপলোড হয়েছে। তখন সেখানেই আবেদন করেছি। আবেদনের ৪ দিন পর মেসেজ পেয়েছি।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী অমৃতা বিশ্বাস রিয়া বলেন, আবেদন করার ১৩ দিন পর টিকার মেসেজ পেয়েছি এবং টিকা নিয়েছি। টিকা নিয়ে তেমন কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়নি। ভালো লাগছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় টিকা নিতে পেরে।
এছাড়াও আরও অনেক শিক্ষার্থী টিকা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করছে। তারা বাকি শিক্ষার্থীদেরকে নাগরিক (তদুর্ধ্ব-৩৫) ক্যাটাগরি সিলেক্ট করে ছাত্র-ছাত্রী শ্রেণীতে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য আহবান জানান।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, শিক্ষার্থীরা টিকা নিতে পারছে বিষয়টি জেনে ভালো লাগছে। অনেক প্রচেষ্টার পর টিকা পেয়ে শিক্ষার্থীদের চাওয়া পূর্ণ হচ্ছে। সরকার ও ইউজিসিকে ধন্যবাদ এমন উদ্যোগ নেওয়ার জন্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, আমরা শুরু থেকেই চেষ্টা করেছি সব শিক্ষার্থীই যেন টিকা পায়। এক্ষেত্রে কিছু সমস্যা ছিল, অনেক শিক্ষার্থীর এন আইডি কার্ড ছিলনা।
তিনি বলেন, এরপর আমরা এনআইডি কার্ড করার জন্যও নির্বাচন কমিশনের সাথে কথা বলে বিশেষ ব্যবস্থা করেছি। ফলে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ উপজেলা থেকেই দ্রুত এনআইডি নিতে পারছে এবং টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পারছে। এখন আর কোন সমস্যা নেই।