৩ হাজার শিক্ষার্থীকে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে জবি
কঠোর লকডাউনে রাজধানীতে আটকে পড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ৩ হাজার শিক্ষার্থীকে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে প্রশাসন। গত শনিবার (১৬ জুলাই) থেকে আজ সোমবার (১৯ জুলাই) পর্যন্ত দেশের ৭টি বিভাগের বিভিন্ন জেলায় নিজস্ব পরিবহন ও বিআরটিসির বাস ভাড়া করে শিক্ষার্থীদের পৌঁছে দেওয়া হয়।
জানা যায়, গত শনিবার (১৬ জুলাই) প্রথম দিন নিজস্ব বাস ও বিআরটিসির বাসে সিলেট বিভাগে ২৯৩ শিক্ষার্থী ও রাজশাহী বিভাগে ৫০২ শিক্ষার্থী এবং রংপুর ৭১২ জন সহ মোট ১৫০৭ শিক্ষার্থী। গত রবিবার (১৮ জুলাই) দ্বিতীয় দিন ১১টি বাসে করে বরিশাল বিভাগে ২৮৯ জন শিক্ষার্থী ও খুলনা বিভাগে ৮০৭ জনসহ মোট ১ হাজার ১০০ জন শিক্ষার্থী। তাছাড়া আজ তৃতীয় দিন চট্টগ্রাম বিভাগে ২২০ জন শিক্ষার্থী ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১৮০ জনসহ মোট ৩ হাজার ৮ জন শিক্ষার্থীকে দেশের সব জেলা শহরে পৌঁছিয়ে দেওয়া হয়।
এসময় শিক্ষার্থীদের বাসে উঠানোর পূর্বে শিক্ষার্থীদের শরীরের তাপমাত্রা মেপে দেখার পাশাপাশি আইডি কার্ড ও অন্যান্য তথ্য যাচাই বাছাই করে উঠানো হয়।
দীর্ঘদিন পর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে জীবনের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে বাড়ি ফিরতে পেরে উচ্ছ্বাসিত শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, প্রায় দেড় বছর পর ক্যাম্পাসে সহপাঠীদের সাথে দেখা হয়েছিলো। এবার কঠোর লকডাউনে প্রায় সবাই চিন্তিত ছিলো কিভাবে বাড়িতে যাবো? এবারের ঈদ কি বাড়িতে করতে পারবো না? কিন্তু সকল চিন্তার অবসান ঘটিয়ে আমরা বাড়ি পৌঁছে গেছি। তাও আবার আমাদের ক্যাম্পাসের বাসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস করে এমন ভাবে কখনো বাড়ি ফেরা হয়নি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোস্তফা কামাল বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে আমাদের জন্য এই কাজটি একটু কঠিন ছিল। তবে শিক্ষার্থীদের বাড়ি পৌঁছিয়ে দিতে পেরেছি এটি অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। আমরা শিক্ষার্থীদের প্রত্যেককে মাস্ক, শরীরের তাপমাত্রা এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজিং করে বাসে উঠিয়েছি। তারা বাড়ি যাওয়া পর্যন্ত খোঁজ-খবর রেখেছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করাই আমাদের কর্তব্য। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় ৩ হাজার শিক্ষার্থীকে বাড়িতে পৌঁছিয়ে দিয়েছি। এতে নিয়মিত অনিয়মিত সব শিক্ষার্থীকেই আমরা অগ্রাধিকার দিয়েছি।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের বাড়ি পৌঁছিয়ে দিতে পেরেছি এটা আমাদের জন্য আনন্দের। আমরা চেয়েছি তারা বাড়িতে গিয়ে তাদের পরিবারের সাথে ঈদ করতে পারে। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা বাড়ি পৌঁছানো পর্যন্ত আমরা খোঁজ-খবর রাখছি। আমাদের এই কার্যক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি, পরিবহন প্রশাসন, ছাত্র উপদেষ্টা, ছাত্র কল্যাণ পরিচালকসহ সকলে নিরলস ভাবে কাজ করেছে; আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। শিক্ষার্থীদের সকল সমস্যায় আমরা ভবিষ্যতেও পাশে থাকব।
জানা যায়, লকডাউনের কারণে শিক্ষার্থীদের আবেদন ও স্মারকলিপির পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন জেলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাস দেওয়ার এই উদ্যোগ নেওয়া হয়।