করোনার প্রাথমিক চিকিৎসা নেই ইবির মেডিকেলে, কুষ্টিয়া যাচ্ছেন শিক্ষকরা
করোনার এই ভয়াবহ সময়ে চিকিৎসা মিলছে না ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) মেডিকেলে। পর্যাপ্ত চিকিৎসা সামগ্রী ও লোকবল সংকটে বেহাল দশা মেডিকেলটির। ফলে করোনার চিকিৎসা নিতে এসে মেডিকেলের অসহযোগিতায় হতাশ হচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মেডিকেলের এসব সংকট উত্তরণে প্রশাসনের কোন প্রকার সুনজর নেই বলে অভিযোগ তাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন আবাসিক শিক্ষক তার পরিবারসহ করোনা আক্রান্ত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে গেলে কোন প্রকার চিকিৎসা পাননি তিনি। পরবর্তীতে কুষ্টিয়া মেডিকেল থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ইনজেকশন নিয়ে আসেন। তবে ক্যাম্পাসে এসে ইনজেকশনটি সময় মতো দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে গেলে লোকজন না থাকায় ইনজেকশন দিতে ব্যর্থ হন তিনি। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। মেডিকেল সেন্টারে এতজন স্টাফ থাকার পরেও সামান্য ইঞ্জেকশন দেওয়ার মত কেউ নেই। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার মত ন্যূনতম প্রস্তুতিও যদি মেডিকেলে নেই। এটা চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয়। আবাসিক শিক্ষক-কর্মকর্তারা পরিবারসহ চরম ঝুঁকিতে রয়েছে।’
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বৃহৎ মেডিকেলটি চলছে একজন নার্স ও দুইজন কর্মকর্তা দিয়ে। ফলে করোনার এই সময়ে চিকিৎসার জন্য মেডিকেলে গেলে যথাযথ চিকিৎসা নিতে পারছেন না কেউ। একইসাথে মেডিকেলটিতে নেই করোনার চিকিৎসা সামগ্রীও। ফলে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে পারছেন না মেডিকেল কর্তৃপক্ষ। রোগীদের কুষ্টিয়া মেডিকেল যাওয়ার পরামর্শ দেয়ার মধ্য দিয়েই দায়িত্ববোধ শেষ করছেন তারা। মেডিকেলের এসব সংকট উত্তরণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোন প্রকার সুনজর নেই বললেই চলে।
এ বিষয়ে মেডিকেলের প্রধান কর্মকর্তা ড. নজরুল ইসলাম বলেন, মেডিকেলে পর্যাপ্ত লোকবল না থাকায় আমরা পরিপূর্ণ সেবা দিতে পারছি না। সেইসাথে মেডিকেলে করোনা রোগীদের জন্যও পর্যাপ্ত চিকিৎসা সামগ্রী নেই। তবে কিছুদিন আগে মেডিকেলের লোকবল ও করোনার চিকিৎসা সামগ্রীর জন্য কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত দেয়া হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘করোনা মহামারীর সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল হাসপাতালকে আমরা যতদূর সম্ভব কাজে লাগানো যায় সে ব্যবস্থা করা যেতে পারে। যদি মেডিকেলে করোনার প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায় তাহলে সেটা অবশ্যই প্রসংশার দাবি রাখে।