বিনিয়োগ ছাড়াই ১০ লাখ আয় করেছেন কুবি শিক্ষার্থী শাহ আলম
প্রতিটি ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রয়োজন মূলধন। যে যত বেশি বিনিয়োগ করবে তার ততোবেশি লাভ হবে। এমন ধারণাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিনিয়োগ ছাড়াই মাত্র ৯ মাসে করে ১০ লাখ টাকা আয় করলেন শাহ আলম।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের স্নাতক ৪র্থ বর্ষে পড়ছেন তিনি। পড়াশোনার পাশাপাশি দেশীয় পণ্য নিয়ে কাজ করছেন।পূর্বের ব্যবসা নিয়ে চিন্তা করোনার ছুটিতে কাজে লাগিয়েছন তিনি।
বাড়িতে গরুর ঘানিতে ভাঙা খাঁটি সরিষার তেল দিয়ে শুরু করেন অনলাইনে বিক্রি। ‘শিকড়-দেশি পণ্য’ নামে একটি ফেসবুক পেইজ থেকে প্রচারণা শুরু করেন। এরপর থেকে দেশ-বিদেশ থেকে অর্ডার আসতে থাকে। অর্ডার পেলেই কুরিয়ারে বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে দিচ্ছেন পণ্য। শুরুর দ্বিতীয় মাসেই ধরা দেয় সফলতা। আমেরিকান এক বাংলাদেশির বড় অর্ডার আসে।
শাহ আলম বলেন, করোনা মহামারির সময় যখন সবকিছু ছেড়ে বাড়িতে অবসর সময় কাটাচ্ছি তখন পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করি। তখনই উদ্যোক্তা হিসাবে কাজে নেমে পড়া। কিন্তু টাকা না থাকায় বিপাকে পড়ি শুরুতেই। তখন বাসায় সরিষার দানা ছিল আর এটা দিয়েই শুরু করি।
শুরুতে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে জানিয়েছে তিনি বলেন, অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি। অনলাইনে কাজের জন্য প্রয়োজন ইন্টারনেট। কিন্তু গ্রামে নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে অনেকটা পিছিয়ে থাকতে হয়েছে। কাস্টমারদের সঙ্গে দ্রুত ডিল করা এবং উত্তর দেয়া সম্ভব হত না। কুরিয়ারে পণ্য পাঠানো ছিল সবচেয়ে বড় সমস্যা। গ্রাম থেকে জেলা শহরের দূরত্ব প্রায় ৫০/৬০ কিলোমিটার। এরপর এসএ পরিবহন ছাড়া অন্য কোনো কুরিয়ার খাঁটি সরিষার তেল বহন করত না৷
তরুণ এই উদ্যোক্তা নিজের কর্মসংস্থানের পাশপাশি ১০-১৫ জন মানুষের কর্মসংস্থান করেছেন। একজনের কথা বলতে পারি। যিনি একটি কোচিং সেন্টারের আয় দিয়ে পরিবার চালাতো। কিন্তু করোনার জন্য সরকার কোচিং সেন্টার বন্ধ করে দিলে তারা খুব বেশি অভাবে পড়ে যায়। তারপর অনলাইনের মাধ্যমে আমার সঙ্গে পরিচয়। তারপর থেকে খাদি পাঞ্জাবি সেল করে তারা সংসার চালায়।
এরইমধ্যে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে শাহ আলমের এই ব্যবসা। আমেরিকা, কানাডা, অস্টেলিয়াসহ প্রায় ১০টি দেশে পণ্য ডেলিভারি দিচ্ছেন। রাজশাহী, খুলনা অঞ্চলে বেশি অর্ডার পেয়ে থাকেন। তার মধ্যে বিদেশে খাদি কাপড়, মণিপুরী শাড়ি এবং দেশীয় তাঁতের শাড়ির চাহিদা বেশি।
এছাড়াও তরুণ এই উদ্যোক্তা নতুনদের ই-কর্মাসে জোর দিতে আহ্বায়ন জানান। তার মতে তীব্র ইচ্ছা এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে যেকেউ অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবে।