০৪ জুলাই ২০২১, ২০:৩৩

কুবির এক তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থীর অনলাইন পরীক্ষায় অনীহা

  © ফাইল ফটো

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) এক তৃতীয়াংশেরও বেশি অথ্যাৎ ৩৪ ভাগ শিক্ষার্থী অনলাইনে পরীক্ষা দিতে আগ্রহী নন। আর ৬৬ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইনে পরীক্ষা দিতে চান। বাকী ৩৪ শতাংশের মধ্যে অনলাইনের বিপক্ষে ১৭ শিতাংশ, ঈদের পর সশরীরে পরীক্ষা দিতে চান ১৫ শতাংশ, এসাইনমেন্টের মাধ্যমে মূল্যায়ন চান ১ শতাংশ এবং বাকীরা অটোপাশ ও শুধুমাত্র ইনকোর্স অনলাইনে দিতে চান।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (কুবিসাস) গ্রুপে পরিচালিত এক অনলাইন জরিপে মোট ১ হাজার ৬৪৩ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। গত শুক্রবার উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী 'শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে অনলানে পরীক্ষা নেয়া হবে' জানালে শুক্রবার রাত থেকে এ জরিপ পরিচালনা করা হয়।

রবিবার রাত পর্যন্ত মোট ১ হাজার ৬৪৩ জন শিক্ষার্থী জরিপে অংশ নেন। জানা যায়, করোনা সংক্রমণের ফলে গত বছরের ১৭ মার্চ হতে বন্ধ রয়েছে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় গত বছরের ২০ ডিসেম্বর থেকে এ বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্বশরীরে পরীক্ষা নেয়। কিন্তু করোনা সংক্রমণ বেড়ে গেলে পরীক্ষা স্থগিত করে আবার গত ১৩ জুন থেকে পরীক্ষা নেয়া শুরু করে। আবার ২৫ জুন থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়। তখন থেকে শিক্ষার্থীরা অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানালে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে অনলাইনে পরীক্ষা নেয়া হবে বলে জানান।

একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের শিক্ষার্থী মানজুরুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এ সময়ে অনলাইনে পরীক্ষা নিয়ে সেশনজট থেকে মুক্তি করে দিচ্ছে। অথচ আমরা পিছিয়ে রয়েছি। শিক্ষার্থীদেরকে ৪ বছর অনার্স শেষ করতে সময় লাগে ৬ বছর। এই সেশনজট থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী অনলাইনে পরীক্ষা দিতে নারাজ। তারা জানান, এদেশে অনলাইন ব্যবস্থা এখনও তৈরি হয়নি। পার্বত্য অঞ্চলে নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। এছাড়া সবার পর্যাপ্ত আধুনিক ডিভাইস নেই। সেসব বিবেচনা করে সশরীরে পরীক্ষা নেওয়া জরুরি।

এদিকে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ইউজিসির নির্দেশনা অনুযায়ী ডিজেস্টার রিকভারী গাইডলাইন প্রণয়ণ করতে আগ্রহী বিশ্ববিদ্যালয়। তাই ২৪ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের এক সভায় ডিজেস্টার রিকভারী গাইডলাইন প্রণয়ণ ও অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে দুইটি কমিটি করা হয়েছ। তবে দুইটি কমিটি দুইটি এখনো কার্যক্রম শুরু করেনি।

ডিজেস্টার রিকভারী গাইডলাইন প্রণয়ণ কমিটির আহ্বায়ক রশিদুল ইসলাম শেখ বলেন, কমিটি হয়েছে তবে আমি এখনো চিঠি পাইনি। চিঠি হাতে পেলে নির্দেশনা অনুযায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে কাজ শুরু করব।

শিক্ষার্থীরা চাইলে অনলাইনে চূড়ান্ত পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, এখনও কোনো বিশ্ববিদ্যালয় সেভাবে অনলাইন পরীক্ষা শুরু করেনি। যারা শুরু করেছে তাদের বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সব এলাকায় ভাল নেটওর্য়াক নাই। সবাই পরীক্ষায় বসতে পারবে না। তাহলে কিভাবে সম্ভব? করোনা সংক্রামণ কিছুটা কমলে আমরা সশরীরে পরীক্ষার কথা ভাবছি। তবে শিক্ষার্থীরা চাইলে অনলাইনে পরীক্ষার বিষয়টি ভেবে দেখব।

অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলো অনলাইনে নেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে আমরা কমিটি করে দিয়েছি। আমাদের পক্ষ হতে ইউজিসির সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। আমরা সামর্থ্য অনুযায়ী ভাইভা, প্রেজেন্টেশনগুলো এখন অনলাইনেই নিচ্ছি।