কুবিকে নিয়ে বানোয়াট তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে: শিক্ষক সমিতি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে (কুবি) নিয়ে মিথ্যা, বানোয়াট ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারের নিন্দা জানিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। বৃহস্পতিবার সকালে সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. শামীমুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি তারা এ নিন্দা জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুটিকয়েক শিক্ষক দেশের স্বনামধন্য একটি টিভি চ্যানেলকে ব্যবহার করে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে নেতিবাচক তথ্য উপস্থাপন করে জাতিকে বিভ্রান্ত করেছেন।
তারা নিয়মতান্ত্রিক প্রশাসনিক সিদ্ধান্তকে অগ্রাহ্য করে অনিয়মকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য আংশিক ও খণ্ডিত তথ্য উপস্থাপন করে দেশের আপামর জনসাধারণের কাছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকবৃন্দ সম্পর্কে নানানাবিধ বিভ্রান্তিমূলক ও অসত্য তথ্য উপস্থাপন করেছেন।
এতে বলা হয়, অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী দু'জন শিক্ষক মাননীয় উপাচার্য ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে জনসমক্ষে বিব্রত হেনস্তা করেছেন। শিক্ষকগণ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে নিয়েও মিথ্যাচার করে তার সুষ্ঠুভাবে চলমান দায়িত্ব ও কর্তব্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তিকে চরমভাবে ক্ষুন্ন করেছে।
বিজ্ঞতিতে আরও বলা হয়, একাত্তর টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার গোপনীয় তথ্য ফাঁস করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট কর্তৃক গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের একজন শিক্ষকের অবৈধ প্রমোশন বাতিল করায় এ বিষয়ে বিষোদগার, উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগ পরীক্ষায় ফেল করা পরীক্ষার্থীকে নিয়োগের বিষয়ে মিথ্যা অভিযোগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য উপস্থাপনসহ আরও নানাবিধ ভিত্তিহীন, অমূলক ও অসত্য তথ্য দেশের স্বনামধন্য ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াসমূহে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপপ্রচার করে অনিয়মের প্রতি নিজেদের অবস্থানকে তারা প্রতিষ্ঠিত করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াসহ একাত্তর টিভিতে সাক্ষাতকার প্রদানের সময় দেয়া তাদের এ ধরনের মিথ্যা ও পরিকল্পিত অপপ্রচার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে অস্থিতিশীল করবার একটি নোংরা প্রয়াস হিসেবে পরিগণিত। মেগা প্রকল্পের কাজে প্রতিবন্ধকতা তৈরীর জন্য একটি মহল সুপরিকল্পিতভাবে অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে।
প্রতিটি উপাচার্যের মেয়াদের শেষ সময়ে যা তারা করে থাকে। এ ধরনের অপপ্রচার ও অপপ্রয়াসের বিষয়ে তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসম্মানকে জাতির সামনে ভুলুণ্ঠিত করার জন্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে উক্ত শিক্ষকগণের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, গত রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০তম সিন্ডিকেট সভায় ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার উদ্দেশ্যপ্রণেদিত তথ্য গণমাধ্যমে সরবরাহ করার সংশ্লিষ্টতা উচ্চতর তদন্ত কমিটির তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মো. মাহবুবুল হক ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়াার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এরপর ২৯ জুন একটি বেসরকারী টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে আলোচনার জন্য উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী, নৃবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোহাম্মদ আইনুল হক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মো: মাহবুবুল হক ভূঁইয়া অংশ নেন। এরপর ওই অনুষ্ঠানে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও উপাচার্য সম্পর্কে মিথ্যা, বানোয়াট ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করে জাতির কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করা হয়েছে দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে-বিপক্ষে বির্তকের সৃষ্টি হয়।