নিজেকে নির্দোষ দাবি কুবির সেই শিক্ষকের
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের 'বি' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল নিয়ে গণমাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তথ্য সরবারহের বিষয়টি অস্বীকার করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুল হক ভূঁইয়া।
মঙ্গলবার (২৯ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তিনি। এসময় তিনি উচ্চতর তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ ও ভর্তি পরীক্ষায় দায়িত্বে অবহেলারকারীদেরও বিচার দাবি করেছেন।
মাহবুবুল হক ভূইয়াঁ বলেন, ২০১৯ সালের ভর্তি পরীক্ষায় একজন পরিক্ষার্থী পরীক্ষা না দিয়েও ১২তম হয়। এ ঘটনায় গণমাধ্যমকর্মীরা সংবাদ প্রকাশ করলে ওই ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ করা হয়। গতকাল ২৮ জুন বিভিন্ন গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানতে পারি যে, এ ব্যাপারে গঠিত তদন্ত কমিটি উক্ত ঘটনায় আমি গণমাধ্যমে তথ্য সরবরাহ করেছি বলে প্রমাণ পেয়েছেন। তাদের এমন দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর। আমি উক্ত ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নই।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আহবান জানিয়ে তিনি বিলেন, আমি যে তথ্য দিয়েছি সে প্রমাণ আপনারা জনসমুক্ষে প্রকাশ করুন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ করুন। আমিও জানতে চাই আমি কীভাবে জড়িত। তিনি আরও বলেন, একজন পরীক্ষার্থী ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষে অনুপস্থিত থেকেও যে ১২তম হলো সেটি কীভাবে হলো, তার প্রকৃত তথ্য জানতে চাই। পাশাপাশি যাদের কর্তব্য অবহেলা, গাফিলতির কারণে ঘটনাটি ঘটলো তাদের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, এখনও তো বিচার হয়নি। এটা মাত্র ফ্যাক্ট চ্যাকিং কমিটির তদন্ত হলো। আমরা ২০১৮ সালের বিভাগীয় বিধি অনুযায়ী ব্যাবস্থা নিবো। তখন অবশ্যই তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হবে। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ২৯ নভেম্বর বিভিন্ন গণমাধ্যমে ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে 'কুবিতে পরীক্ষা না দিয়ে মেধা তালিকায় ১২তম' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। এর প্রেক্ষিতে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির শঙ্কা সৃষ্টি হলে ৩০ নভেম্বর ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
“পরে ৩ ডিসেম্বর সেই তদন্ত কমিটি সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, জালিয়াতি নয় বরং অন্য এক শিক্ষার্থী ভুল রোল নাম্বার ভরাট করায় এবং এ শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকায় অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর ও.এম.আর মেশিনে ফলাফল চলে আসে। এতে এ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও মেধাতালিকায় ১২ তম হয়। সেই সময়ে অভিযোগ উঠে সংশ্লিষ্ট ইউনিটের ভর্তি কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট কোন এক সদস্য উউদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ তথ্য সরবারহ করার অভিযোগ উঠে। এরপর ৫ ডিসেম্বর 'উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গণমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি বিনষ্টকারী ব্যক্তি বা গোষ্ঠির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি'তে শিক্ষক সমিতি মানববন্ধন করে।”
“এরপর এ ঘটনায় তথ্য সরবরাহের অভিযোগ এনে 'উচ্চতর তদন্ত কমিটি' নামে আরেকটি কমিটি গঠিত হয়। কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ২৭ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০ তম সিন্ডিকেট সভা গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুল হক ভুইয়াঁকে দোষী সাব্যস্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়।”