কুবিতে ৫ তলা ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের পাঁচ তলা থেকে পড়ে ফারুক (৩০) নামে এক রঙমিস্ত্রী নিহত গিয়েছেন। চিকিৎসাকেন্দ্রের সাথে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। রোববার (২৭ জুন) বেলা ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
কুবি রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, দুর্ঘটনার পর আহত অবস্থায় তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তবে শ্রমিক নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সবসময় বলে এসেছি। এ ঘটনার সব দায়ভার তাদেরকে নিতে হবে। আমরা এ ব্যাপারে তাদের সাথে কথা বলেছি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে বন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলসমূহ খোলার প্রস্তুতি হিসেবে বিশেষ প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি হল সংস্কার কাজ চলছে। এই কাজের অংশ হিসেবে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের সংস্কার কাজ চলছিল। তবে কোনো ধরনের নিরাপত্তা বেষ্টনী না রেখেই শ্রমিক দিয়ে কাজ করছিল সুরাইয়া এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আর তাতেই পাঁচ তলা থেকে পড়ে যান হন এ শ্রমিক। পরবর্তীতে তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নেওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মেডিকেল কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান খান বলেন, শ্রমিকের অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক ছিল। তাই আমরা তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেছি। মেডিকেলের জরুরি বিভাগ থেকে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
এ বিষয়ে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ জুলহাস মিয়াকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমি এখনো ইনফর্মড হইনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ার দফতর এ ব্যাপারে ভালো বলতে পারবে। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাদের কোনো ধরনের নিরাপত্তা বেষ্টনীর ব্যবস্থা করেনি। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় তারা কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন। এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সুরিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক ও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ২৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফজল খানকে একাধিক বার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পাওয়া যায় নি।
পরে কাজে নিযুক্ত প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধি আব্দুল হামিদ বলেন, দুর্ঘটনায় পর ফজল খান নিজেই হাসপাতাল গিয়েছেন। তবে নাম্বার বন্ধের বিষয়ে কিছু জানি না। তবে আমরা তার তদারকি করছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল লতিফ বলেন, আমরা সার্বক্ষনিক তাদেরকে তদারকি করতে পারি না। কাজের শুরুতেই তাদের সাথে শর্ত ছিল শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এখন তারা কেন নিরাপত্তা নিশ্চিত করেনি সেটার জন্য তাদের জবাবদিহি করতে হবে।