জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় টিকার আবেদন করতে পারেনি জবির কয়েক হাজার শিক্ষার্থী

জবি
জবি  © ফাইল ছবি

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের করোনা টিকার আওতায় আনতে তথ্য সংগ্রহ করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরই ধারাবাহিকতায়  জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের  (জবি) শিক্ষার্থীদের করোনা ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য নিবন্ধনের তথ্য সংগ্রহ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অনলাইনে শিক্ষার্থীরা ভ্যাকসিনের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি নাম্বার, ডিপার্টমেন্টের তথ্য দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন করেছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থীই এই নিবন্ধনের বাইরে রয়েছেন। জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) না থাকায় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী তাদের তথ্য দিতে পারেনি এবং বিকল্প কোন উপায়ও বলছে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ফলে সকল  শিক্ষার্থীকে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় এনে ক্যাম্পাস খোলার উদ্যোগটি সফল হতে দীর্ঘ সময় লেগে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবি, জাতীয় পরিচয়পত্রের বিকল্প হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র ও জন্ম নিবন্ধনের সনদপত্র দিয়ে সবাইকে ভ্যাকসিন নিবন্ধনের আওতায় আনা।

জানা যায়, দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আগেই রেজিষ্ট্রেশন করতে বলা হয়েছে কিন্তু সেই হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিষ্ট্রেশন করতে বলা হয়েছে অনেক পরে। মে মাস থেকে টিকার গুঞ্জন শোনা গেলেও চলতি মাসের ৩ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শিক্ষার্থীদের তথ্য চাওয়া হয় এবং মাঝে ৭ দিন সময় দিয়ে ১০ জুন অনলাইনে শিক্ষার্থীরা তথ্য দিয়ে আবেদন করেন। কিন্তু নির্ধারিত এই ৭ দিনে ১৭ হাজার ৩১৪ শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ৯ হাজার চারশত ৫৪ জন শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছেন। যার প্রায় অর্ধেকাংশই এনআইডি না থাকায় বাদ পড়েছে।

এনআইডি না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী নিবন্ধন করতে পারছেন না। এদিকে এনআইডি না থাকা শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

বাংলা বিভাগের ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী উর্মি বলেন, এখন পর্যন্ত আমি এনআইডি কার্ড পাইনি। সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দেওয়া সময়ে চেষ্টা করেও আবেদন করতে পারিনি। এনআইডির বিকল্প হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিক আইডি কার্ড অথবা জন্মনিবন্ধন কার্ড দিয়ে নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়া উচিত।

শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফারিয়া ইয়াসমিন বলেন, আমি এখনও এনআইডি পায় নি।যে কারণে টিকার জন্য রেজিষ্ট্রেশন করতে পারিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীদের এনআইডি নেই সবার কথা বিবেচনা করে জন্মনিবন্ধন কার্ডের নাম্বার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি নাম্বার দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করার সুযোগ দিলে ভালো হতো।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড.উজ্জ্বল কুমার আচার্য্য বলেন, সর্বশেষ সময় পর্যন্ত ৯ হাজার ৪৫৪ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছে টিকার জন্য।শিক্ষার্থীদের তথ্যগুলো আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। মন্ত্রণালয় থেকেই সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে মেসেজে পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের কত তারিখ ও কোন জায়গায় টিকা দেওয়া হবে সেগুলো জানানো হবে। এ সময় যাদের এনআইডি নেই তাদের বিষয়ে বিকল্প কোন ব্যাবস্থা নিচ্ছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, এ বিষয়ে আমি জানিনা। রেজিস্ট্রার স্যার ভালো বলতে পারবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী ওহিদুজ্জামান বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের ডেটা এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। মন্ত্রণালয় থেকেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ তারপর সরকারেরও টিকা প্রাপ্তির একটি বিষয় আছে। যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই তাদের বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে আবার জানতে চাইব। এন আইডির বিকল্প হিসেবে মন্ত্রনালয় থেকে এখনও কোন সিদ্ধান্ত আসেনি। মন্ত্রণালয় থেকে আমরা যে নির্দেশনা পাব সেটি শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দিব।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, বিষয়টা সম্পর্কে আমি অবগত হয়েছি। জানতে পেরেছি যে জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী টিকার নিবন্ধন করতে পারে নি।যেহেতু বড় একটা অংশ নিবন্ধন করতে পারেনি তাদের বিষয়ে মন্ত্রনালয়ে জানাবো এবং যেভাবে করতে বলে  আমরা সেভাবে করতে বলবো।


সর্বশেষ সংবাদ