ফেসবুকে ‘প্রেমের ফাঁদে’ আটকে মুক্তিপণ আদায়, চার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আটক
ফেসবুকে নারী সেজে প্রেমের ফাঁদ পেতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে আটকে রেখে মারপিট ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) চার ছাত্রকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (৫ জুন) সন্ধ্যায় নগরীর সরদারপাড়া থেকে ৩ জনকে এবং বিকেলে একই এলাকা থেকে ১ জনকে গ্রেপ্তার করে তাজহাট থানা পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। তাজহাট থানার পরিদর্শক আখতারুজ্জামান প্রধান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার চারজন হলেন- নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার উত্তর খড়িবাড়ী এলাকার কলিমুদ্দীন মন্ডলের ছেলে ও বেরোবির ইংরেজি বিভাগে ৫ম ব্যাচের ছাত্র মানিক রহমান সাজু (২৭), পঞ্চগড় অটোয়ারী উপজেলার মংলু চন্দ্রের ছেলে ও বেরোবির ইংরেজি বিভাগের ৫ম ব্যাচের ছাত্র দুলাল চন্দ্র (২৭), লালমনিহাটের কালিগঞ্জ উপজেলার চলবলা এলাকার পুলিন চন্দ্রের ছেলে ও বেরোবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ৭ম ব্যাচের ছাত্র জগত পতি (২৬), লালমনিহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার দক্ষিণ জাওরানী এলাকার বারেক মিয়ার ছেলে ও বেরোবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র শাহ আলম সাদেক (২৬)।
অন্যদিকে ভুক্তভোগী ছাত্রের নাম আসাদুজ্জামান। সে রাজধানীর সাউথ-ইস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র। তার বাড়ি নীলফামারী জেলার ডিমলার খগাখড়িবাড়ি।
মামলার বাদী আসাদুজ্জামান জানান, ফেসবুকে এক বছর ধরে সিনথিয়া নামে একটি আইডির মাধ্যমে একজনের সঙ্গে পরিচয়ের পর তার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই সম্পর্কের সূত্র ধরে ‘প্রেমিকার’ সঙ্গে দেখা করতে শনিবার দুপুরে বাড়ি থেকে রংপুরে আসেন আসাদুজ্জামান। তারপর তিনি বেরোবির ক্যাফেটরিয়ায় গেলে পূর্বপরিচিত মানিকসহ কয়েকজনের দেখা পান। সেখান থেকে মানিক অন্যদের সাহায্যে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পশ্চিম দিকে জঙ্গল ঘেরা একটি স্থানে নিয়ে আটকে রেখে মারপিট করে এবং মোটা অংকের টাকা দাবি করে। পরে বিকাশের মাধ্যমে পরিবারের কাছ থেকে ২৩ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে বিকেলে ছাড়া পান তিনি। ছাড়া পেয়ে ঘটনাটি পুলিশকে জানান তিনি।
অভিযোগ রয়েছে, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ৬-৭ জনের একটি চক্র অনেক দিন ধরে ফেসবুকে সিনথিয়া নামে একটি ফেক আইডি ব্যবহার করে প্রেমের ফাঁদ পেতে আসছিল। ফাঁদে আটকে যুবকদের ধরে ধরে তাদের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ আদায় করতো তারা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক সবাই তাদের অপরাধের কথা স্বীকার করেছের জানিয়ে পরিদর্শক আখতারুজ্জামান প্রধান জানান, আটক মানিক রহমান মেয়েদের কণ্ঠ নকল করে আসাদের সঙ্গে কথা বলতো। কিন্তু আসাদুজ্জামান একবারের জন্য তা বুঝতে পারেনি।
চক্রের অন্যদের ধরতে অভিযান ব্যাহত আছে বলেও জানান আখতারুজ্জামান প্রধান।