জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ

  © ফাইল ফটো

আজ বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) শেষ হতে যাচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদের মেয়াদ। ২০১৭ সালে ২২ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিসির দায়িত্ব পান তিনি।

২০১৩ সালে মার্চ মাসে চার বছরের জন্য প্রথমবার উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন এই অধ্যাপক। অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

এদিকে, সোমবার (১ মার্চ) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেট হলে উপাচার্য হিসেবে দুই মেয়াদ পূর্তি উপলক্ষ্যে প্রেস ব্রিফিংয়ে আসেন অধ্যাপক ড. হারুন। এসময় তিনি গত ৮ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, সাফল্য ও অগ্রগতি সাংবাদিকদের সামনে সবিস্তার তুলে ধরেন।

এসময় তিনি বলেন, আমার বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় সততা, নিষ্ঠা আর আন্তরিকতার কমতি ছিল না। জীবনের শ্রেষ্ঠ ৮টি বছর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কাটিয়েছি। দ্বিতীয় টার্মেরও একেবারে দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছি। আজ থেকে ৩ দিন পর অর্থাৎ ৪ মার্চ আমার শেষ কর্মদিবস। তবে আমি খুশি মনেই এই প্রতিষ্ঠান থেকে বিদায় নিচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, আমার কারো প্রতি কোনো অভিযোগ-অনুযোগ নেই। আমি যেকোনো পরিস্থিতিতে একজন পরিতৃপ্ত মানুষ। তা মুক্ত অবস্থায় হোক কিংবা রিমান্ড আর কারাগার হোক। কোনো বেদনা বা অভাববোধ আমাকে স্পর্শ করে না। আমার ভেতর যেমন একটি সংবেদনশীল, মানবিক মন আছে, ঠিক অনুরূপভাবে আইন, নিয়মকানুন রক্ষার ক্ষেত্রে আমি খুবই কঠিন। দুর্নীতি, শঠতা, প্রতারণা, স্বার্থপরতাকে আমি ঘৃণা করি। বিশেষ করে দুর্নীতির ক্ষেত্রে আমার অবস্থান ‘জিরো টলারেন্স’। আমি মনে-প্রাণে, চিন্তা-চেতনায় জাতির পিতার আদর্শের অনুসারী। তার কোনো অনুসারী অন্যায় করতে পারে না, মানুষের ওপর জুলুম করতে পারে না, দুর্নীতি-ব্যভিচার করতে পারে না বলে আমি বিশ্বাস করি।

ড. হারুন-অর-রশিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বিএ (অনার্স) ও এম এ উভয় পরীক্ষায় ১ম স্থান অধিকার করে ১৯৮৩ সালে কমনওয়েলথ স্কলারশিপ নিয়ে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ ডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

এছাড়া তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়, সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাপানের রিউকোকু বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা করেন।

১৯৭৯ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক হিসেবে তার শিক্ষকতা পেশা শুরু করেন তিনি। সেখান থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে যোগ দেন তিনি।

৪২ বছরের শিক্ষকতা জীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ৩ বার নির্বাচিত ডিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (২০০৯-২০১২), বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির জেনারেল সেক্রেটারি, অধ্যাপক শামসুল হক শিক্ষা কমিটির সদস্যসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে তিনি অবসরে যান।