জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সিনেট অধিবেশনে ২১ সুপারিশ ভিসির

  © টিডিসি ফটো

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০ সালের দ্বিতীয় বিশেষ সিনেট অধিবেশন অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় অধিবেশনে সিনেট চেয়ারম্যান ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ তাঁর অভিভাষণে দীর্ঘ দুই টার্ম অর্থাৎ ৮ বছর পুরণ শেষে তার প্রশাসন আমলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটিভিত্তিক পরিচালন ব্যবস্থা, আঞ্চলিক কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণ, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ, নতুন নতুন একাডেমিক কার্যক্রম প্রবর্তন, কলেজ শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের বিশেষ আয়োজন, বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতিকালিন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য গৃহীত কার্যক্রম, মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপ, কলেজ পারফরমেন্স র‌্যাংকিং, মডেল কলেজ প্রকল্প, ১৩টি শতবর্ষী কলেজ প্রকল্প, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারিদের জন্য পরিবহন সুবিধা সম্প্রসারণ, প্রশাসনকে অধিকতর দক্ষ স্বচ্ছ গতিশীল ও জবাবদিহিমূলক করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে একাধিক নতুন দপ্তর ও সেল সৃষ্টি, সিন্ডিকেট সিনেট একাডেমিক কাউন্সিলসহ বিভিন্ন বডির সভা, কলেজ ও প্রফেশনাল প্রতিষ্ঠানের অধিভুক্তি, শিক্ষার্থীদের এম ফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান, স্পেনভিত্তিক শিক্ষা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়েবমেট্রিকস এর র‌্যাংকিং এ বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩তম স্থান অর্জন ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট তথ্য ও পরিসংখ্যান তুলে ধরেন।

ভবিষ্যতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য করণীয় এমন ২১টি সুপারিশ উল্লেখ করে সিনেট চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের প্রতিনিয়ত স্মরণে রাখা দরকার, পদ-পজিশন ভোগের জন্য নয়, ত্যাগ ও সেবার মধ্যেই স্বার্থকতা।

তিনি আরও বলেন, উচ্চপদে আসীনদের সমাজে শুদ্ধাচারের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হয়। সর্বশেষে উপাচার্য তাঁর অভিভাষণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সম্ভাবনার কথা উল্লেখপূর্বক বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সততা ও নিষ্ঠা থাকলে মানুষের পক্ষ্যে অসম্ভব কিছু নয়।

এই সিনেট অধিবেশনে করোনাকালীন যেসব দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ ও অন্যান্য যেসব ব্যক্তিত্ব মৃত্যুবরণ করেছেন সভায় তাদের বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয় এবং বাংলাদেশ জাতিসংঘ কর্তৃক ৩ বছর পূর্বেই উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি লাভ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর সরকার এবং দেশবাসীকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করা হয়।

এ সিনেট অধিবেশনে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, সংসদ সদস্য বেগম আরমা দত্ত, সংসদ সদস্য ও বিশিষ্ট সাংবাদিক মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীজানুর রহমান, বিশিষ্ট নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, সকল বিভাগীয় কমিশনারসহ মোট ৫৬ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

এদের মধ্যে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, জাতীয় সংসদ সদস্য ও সাংবাদিক মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, সংসদ সদস্য বেগম আরমা দত্ত, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সাবেক সদস্য প্রফেসর ড. শরীফ এনামুল কবির, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর মীজানুর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুনাজ আহমেদ নূর, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশীদ খান, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক, যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোল্লা আমীর হোসেনসহ ২৩ জন সদস্য উপাচার্যের অভিভাষণের উপর আলোচনা করেন।

আলোচকবৃন্দ উপাচার্যের দক্ষ, স্বচ্ছ ও গতিশীল নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, বিগত ৮ বছরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বক্ষেত্রে যে উন্নয়ন সাধিত হয়েছে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ইতিহাস হয়ে থাকবে।

উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা থেকে এ পর্যন্ত ১০ জন উপাচার্যের মধ্যে একমাত্র বর্তমান উপাচার্যই পরপর দুই টার্ম সফলভাবে সম্পন্ন করেন। সিনেটে কয়েকটি নতুন দপ্তর ও শাখা সৃষ্টি ও তফসিল সংবিধিবদ্ধ করা হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীভূত প্রতিষ্ঠান মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউট এর নাম সংশোধন করে ‘বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউট’ নামে নতুন নামকরণ করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ