অনশনরত শিক্ষার্থীদের জোর করে উঠিয়ে দিলো পুলিশ, কিছুই জানেনা অধ্যক্ষ!
পুলিশি বাঁধায় পন্ড হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন কর্মসূচি। বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ৩ দফা দাবিতে ঢাকা কলেজের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ও আমরন অনশনে বসে ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থীরা ৷
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অনশন কর্মসূচি শুরু হওযার কিছু সময় পরই পুলিশ এসে শিক্ষার্থীদের সাথে দুর্ব্যবহার শুরু করে এবং দ্রুত সরে যাওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। একপর্যায়ে পুলিশ অনশনরত শিক্ষার্থীদের ছবি তুলে ও জোরপূর্বক মূলফটক থেকে ধ্বস্তাধস্তি করে উঠিয়ে দেয়৷ এসময় শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ব্যানারও কেড়ে নেওয়া হয়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা ৩ দফা দাবি পূরণ করতে সাত কলেজের সমন্বয়কের কাছে দাবি জানিয়ে আসছেন৷ শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো-
১. ২০১৮-১৯ সেশনের প্রথম বর্ষের ফল ১১ মাস পর দেয়া হয়। তিন বিষয় যারা অকৃতকার্য হয়েছে তাদের আর সময়ক্ষেপণ না করে বিশেষ পরীক্ষা নেয়া।
২. ৪ ঘন্টার পরীক্ষা ২ ঘন্টা নিলেও সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করা হয়নি। সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করা।
৩. সেমিস্টার পদ্ধতি চালু করা।
কিন্তু দীর্ঘদিনেও দাবি পূরণের কোন আশ্বাস না পেয়ে বুধবার দুপুরে এসব দাবি নিয়ে তারা ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ ও সাত কলেজের সমন্বয়ক প্রফেসর আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকারের সাথে দেখা করেন৷ দুপুর ১২ টায় অধ্যক্ষের সাথে দেখা করলে তাদের দাবি মানা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন অধ্যক্ষ৷ এরপর থেকে কলেজের দুই নাম্বার গেইটে অবস্থান নেয় সাত কলেজের ভুক্তভোগী ৪০-৫০ জন শিক্ষার্থী৷ এরপর পুলিশের বাঁধায় দুই নম্বর গেট থেকে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা৷ এসময় তাঁদের (শিক্ষার্থীদের) জানানো হয় ঢাকা কলেজ ছাড়া অন্য ছয়টি কলেজের কোন শিক্ষার্থী সেখানে অবস্থান করতে পারবে না ৷ এসময় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী পল্লব ও হায়দার দাবি আদায়ে অনশনে বসেন৷ অন্য কলেজের শিক্ষার্থীরাও সেসময় পাশেই ছিল৷
দাবি আদায়ে আমরণ অনশনে বসা শিক্ষার্থী হায়দার জানায়, আমরা শান্তিপূর্ন ভাবে অনশন চালিয়ে যাচ্ছিলাম৷ এসময় পুলিশ এসে আমাদের ছবি তুলে ও ব্যানার নিয়ে যায়৷ আমাদের উঠে যেতে বলে৷ এসময় কলেজের কয়েক জন শিক্ষক এসেও আমাদের ছবি তোলেন এবং ভয় ভীতি দেখান। এসময় তাঁরা আমাদের ডিপার্টমেন্টে নিয়ে যেতে চান৷ একপর্যায়ে পুলিশ এসে আমাদেরকে জোর পূর্বক উঠিয়ে দেয়।
তবে শিক্ষার্থীদের এমন অভিযোগ অস্বীকার করেন নিউ মার্কেট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) স ম কাইয়ুম। তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা থাকার কারনে কলেজে আমাদের পুলিশ দায়িত্বে ছিল৷ এরপর কিছু শিক্ষার্থী ওখানে জমা হয়েছিল৷ পুলিশ তাঁদের সরে যেতে বলে৷ এরপর তারা (শিক্ষার্থীরা) সেখান থেকে চলে যায়৷’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আইকে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, কিছু শিক্ষার্থী দুপুরে আমার সাথে দেখা করেছে৷ কোথায় কেন অনশন করেছে বা কেন অনশন করেছে তা আমি জানিনা৷ এছাড়া এসব বিষয়ে আমাদের কোন কর্তৃত্বও নেই৷