পতাকা বিকৃতি: ক্ষমা চাইলেন বেরোবির ১৯ শিক্ষক-কর্মকর্তা
- বেরোবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৪:১৪ PM , আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৪:১৪ PM
বিজয় দিবসে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারক চত্বরে পতাকা বিকৃতি নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য উপাচার্যের মাধ্যমে দেশ ও জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন ১৯ শিক্ষক-কর্মকর্তা। বিষয়টি নিশ্চিত করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তর।
সিন্ডিকেটের ৭৫তম বিশেষ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অপ্রত্যাশিত ওই ঘটনার জন্য ওই শিক্ষক-কর্মকর্তাবৃন্দকে পত্র দিয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক করা হয়েছে এবং দেশ ও জাতির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা প্রত্যেকে ক্ষমা চেয়ে উপাচার্যের কাছে লিখিত বক্তব্য প্রদান করেন।
বক্তব্য প্রদানকারী শিক্ষক-কর্মকর্তাবৃন্দ হলেন- সিন্ডিকেট সদস্য, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. আর এম হাফিজুর রহমান, অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর ড. মো. মোরশেদ হোসেন, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. পরিমল চন্দ্র বর্মণ, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক এবং ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. নুর আলম সিদ্দিক, পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শাহজামান, পরিসংখ্যান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. রশীদুল ইসলাম, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল-এর প্রভোস্ট (চলতি দায়িত্ব), বেরোবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাবিউর রহমান প্রধান, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামান, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারী প্রক্টর মো. ছদরুল ইসলাম সরকার, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর প্রদীপ কুমার সরকার, পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক চার্লস ডারউইন, মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর মো. মাসুদ-উল-হাসান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাম প্রসাদ বর্মণ, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক এবং শহীদ মুখতার ইলাহী হল-এর সহকারী প্রভোস্ট মো. শামীম হোসেন, রসায়ন বিভাগের প্রভাষক ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল-এর সহকারী প্রভোস্ট মোস্তফা কাইয়ুম শারাফাত, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক আবু সায়েদ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রভাষক মো. রহমতুল্লাহ্, ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রভাষক এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল-এর সহকারী প্রভোস্ট সোহাগ আলী এবং পরিসংখ্যান বিভাগের সেকশন অফিসার (গ্রেড-১) শুভঙ্কর চন্দ্র সরকার।
প্রসঙ্গত, গত বছর স্বাধীনতা দিবসে স্বাধীনতা স্মারক চত্বরে কিছু শিক্ষক-কর্মকর্তা জাতীয় পতাকা সদৃশ ব্যানারসহ ছবি তোলেন যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে দেশব্যাপী সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গত ২১ সিন্ডিকেটের বিশেষ সভায় ঘটনা অনুসন্ধানের জন্য একটি ‘অনুপুঙ্খ তদন্ত কমিটি’ গঠন করে। উক্ত কমিটির দেয়া প্রতিবেদনের আলোকে গত ১১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট-এর ৭৪তম সভায় সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর ড. মো. নাজমুল হককে আহ্বায়ক এবং অপর সিন্ডিকেট সদস্য ও প্রক্টর জনাব মো. আতিউর রহমানকে সদস্য সচিব করে তিন সদস্যের ‘তদন্ত কমিটি’ গঠন করা হয়। কমিটির অপর সদস্য ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন।
গত ২০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় পর্যালোচনান্তে দেখা যায়, অনাকাঙ্ক্ষিত ওই ঘটনায় উল্লিখিত শিক্ষক-কর্মকর্তাবৃন্দ ছবি তোলায় অংশ নিয়েছেন। তবে তাঁদের বক্তব্য ও তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী ঘটনাটি অসতর্কতামূলক ও অনিচ্ছাকৃত হলেও বিষয়টি জাতীয়ভাবে সংবেদনশীল হওয়ায় প্রত্যেককে ভবিষ্যতের জন্য সর্বোচ্চ সতর্ক করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এছাড়াও সকলকে উপাচার্যের মাধ্যমে প্রকাশ্যে দেশ ও জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশনা প্রদান করা হয়। জাতীয় পতাকা সদৃশ উক্ত ব্যানার ব্যক্তিগতভাবে সঙ্গে করে নিয়ে এসে ছবি তোলার জন্য ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রভাষক সোহাগ আলীকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল এর সহকারী প্রভোস্ট-এর পদ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে।