শহীদ তিতুমীরের ২২৭তম জন্মদিন আজ

অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষের শ্রদ্ধা

তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আশরাফ হোসেন, শহীদ তিতুমীর ও  উপাধ্যক্ষ ড. মোসা. আবেদা সুলতানা (বাঁ থেকে)
তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আশরাফ হোসেন, শহীদ তিতুমীর ও উপাধ্যক্ষ ড. মোসা. আবেদা সুলতানা (বাঁ থেকে)  © টিডিসি ফটো

ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী নেতা মহাবীর শহীদ তিতুমীরের ২২৭ তম জন্মদিন আজ বুধবার (২৭ জানুয়ারি)। তার প্রকৃত নাম সৈয়দ মীর নিসার আলী। ১৭৮২ সালে আজকের এ দিনে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশপরগনা জেলার হায়দারপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার জন্মদিনে শ্রদ্ধা জানিয়েছে রাজধানী সরকারি তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আশরাফ হোসেন ও উপাধ্যক্ষ ড. মোসা. আবেদা সুলতানা।

তিতুমীরের বাবার নাম মীর হাসান আলী এবং মার নাম আবিদা রোকেয়া খাতুন। তার প্রাথমিক শিক্ষা হয় গ্রামের বিদ্যালয়ে। পরবর্তীকালে তিনি স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেন। ১৮ বছর বয়সে তিনি কোরআনে হাফেজ হন এবং হাদিস বিষয়ে পাণ্ডিত্য লাভ করেন। একই সঙ্গে তিনি বাংলা, আরবি ও ফার্সি ভাষায় ব্যুৎপত্তি লাভ করেন।

অধ্যাপক আশরাফ হোসেন বলেন, ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের পথপ্রদর্শক ছিলেন সৈয়দ মীর নিসার আলী। তিনি তার জীবদ্দশায় সত্য ও ন্যায়ের জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। তার জীবন ও কর্ম আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। আমাদের শিক্ষার্থীরা তার জীবনদর্শন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবে। তিতুমীরের ২২৭তম জন্মদিনে কলেজ পরিবারের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।

সরকারি তিতুমীর কলেজের নামকরণের বিষয়ে উইকিপিডিয়া বলা হয়েছে, এই কলেজটি ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। সে সময় কলেজটি জিন্নাহ কলেজ নামে পরিচিত ছিল। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর কলেজটির নাম পরিবর্তন করে তিতুমীর কলেজ রাখা হয়। কলেজটি ঢাকা শহরের বনানী থানার অন্তর্ভূক্ত মহাখালী এলাকায় অবস্থিত।

প্রতিষ্ঠার সময় কলেজটিতে শুধুমাত্র উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণীতে ক্লাস নেয়া হত, তবে বর্তমানে এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিভিন্ন বিষয়ে স্নাতক সম্মান এবং স্নাতোকত্তর শ্রেণীর শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ‘জিন্নাহ কলেজ’ নামে ১৯৬৮ সালে সরকারি তিতুমীর কলেজ প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনায়েম খান জগন্নাথ কলেজের ছাত্র-আন্দোলনকে নির্মূল করার জন্য মহাখালীতে অবস্থিত ডিআইটি খাদ্যগুদাম হিসেবে পরিচিত ভবনে জগন্নাথ কলেজের ডিগ্রি শাখা স্থানান্তর করেন এবং এর নামকরণ করা হয় জিন্নাহ কলেজ।

১৯৭১ সালের ১ মার্চ পাকিস্তানের সামরিক জান্তা ইয়াহিয়া খান রেডিও-টেলিভিশনে এক ভাষণে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি স্থগিত ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে জিন্নাহ কলেজ শাখার ছাত্র সংসদের প্রথম সহ-সভাপতি (ভিপি) সিরাজউদ্দৌলার নেতৃত্বে টিপু মুনশি ও শাহাবুদ্দিনসহ তৎকালীন কতিপয় ছাত্রনেতা প্রতিক্রিয়া হিসেবে জিন্নাহ্ কলেজের সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলেন।

তখন আনিসুজ্জামান খোকন (জিন্নাহ কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক) জিন্নাহ কলেজের নাম ‘তিতুমীর কলেজ’ প্রস্তাব করেন। ২ মার্চ ছাত্রলীগের কর্মীরা মিছিল করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলায় জড়ো হলে সেখানে তৎকালীন ডাকসু ভিপি আ স ম আবদুর রবের মধ্যস্থতায় জিন্নাহ্ কলেজের নাম ‘তিতুমীর কলেজ’ হিসেবে চূড়ান্ত হয়। ওই রাতেই ‘তিতুমীর কলেজ’ নামকরণের সাইনবোর্ড লেখা হয় এবং দেয়ালে টাঙিয়ে দেয়া হয়। এলাকার কিছু যুবক তিতুমীর নামকরণের ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা করেন।

তিতুমীর কলেজের উপাধ্যক্ষ ড. মোসা. আবেদা সুলতানা বলেন, তিতুমীরের নাম অনুসারে আমাদের কলেজটির নাম করণ করা হয়েছে এতে আমরা গর্বিত। যখন এ কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয় তখন দেশে এরকম ব্যক্তি নাম নাম দিয়ে প্রতিষ্ঠান হচ্ছে এটা খুব কমই ছিল। আমাদের শিক্ষার্থীরা সৈয়দ মীর নিসার আলীর সে নামের মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে।


সর্বশেষ সংবাদ