তিন শিক্ষক নিয়ে কিছুই বলেননি খুবি উপাচার্য
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত দুই শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের আশ্বাস দিয়ে অনশন ভাঙালেও একই ঘটনায় চাকরিচ্যুত তিন শিক্ষকে বিষয়ে কিছু বলেননি উপাচার্য মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমরণ অনশন চালিয়ে আসা ওই দুই শিক্ষার্থীর কাছে যান উপাচার্য। পরে শরবত পান করিয়ে তাদের অনশন ভাঙান তিনি। এসময় তার কাছে তিন শিক্ষকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিরক্তি প্রকাশ করেন।
উপাচার্য বলেন, “আমি যে ইস্যুতে কথা বলছি দয়া করে সেই ইস্যুর মধ্যে থাকলে আমি খুশি হব।” এই বলে শিক্ষকদের বিষয়ে আর একটি কথাও বলেননি তিনি।
তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিন চালু হওয়ার পর এখন সংবাদ মাধ্যম নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে তা চর্চা শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে যুক্ত হতে পারছে এবং তারা হাতে-কলামে শিখতে পারছে। এটা তাদের পেশাগত জীবনে উৎকর্ষ লাভে সহায়ক হবে।
শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙার অনুরোধের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতে অস্থিরতার অবসান ঘটে, সেজন্য সহযোগিতা চেয়েছেন উপাচার্য। তিনি বলেন, তাদেরকে অনুরোধ জানাচ্ছি, তারা যেন তাদের অনশন ভঙ্গ করে এবং বিশ্ববিদ্যালয় যে একটা অস্থিরতার মধ্য দিয়ে চলছে তাদের জন্যে তারা সেই জায়গা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে সহযোগিতা করবে।
এদিকে তিন শিক্ষকের চাকরিচ্যুতির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিও উঠে আসছিল বিভিন্ন মহল থেকে। সোমবার এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে অবিলম্বে এই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নেওয়া সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে ভয়ের রাজত্ব কায়েম করার জন্য এই তিন শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে, যাতে আর কেউ কোনো প্রশ্ন বা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে না পারে।”
তবে ন্যায় বিচার পেতে উচ্চ আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই তিন শিক্ষক। তাদের একজনকে বরখাস্ত ও দুজনকে অপসারণের প্রতিক্রিয়ায় এ কথা জানিয়েছেন অভিযুক্ত বাংলা ডিসিপ্লিনের প্রভাষক শাকিলা আলম। তবে কবে-কখন উচ্চ আদালতে যাবেন এ বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।
অভিযুক্ত অপর দুই শিক্ষক হলেন- বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আবুল ফজল ও ইতিহাস ও সভ্যতা বিভাগের প্রভাষক হৈমন্তী শুক্লা কাবেরী। শাকিলা আলম বলেন, আমরা শিক্ষকরা কর্তৃপক্ষের এই অন্যায় সিদ্ধান্ত মানবো না। খুব শিগগিরই এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে যাবো। আমাদের বিরুদ্ধে অন্যায় হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে এ বিষয়ে সমাধান করা হবে।