এবার শিক্ষকদের ‘নাশকতাকারী’ বললেন বেরোবির সেই খোরশেদ
সাংবাদিক শিক্ষার্থীদের ‘পতিতা’ বলে কটূক্তি করার পরে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে ‘নাশকতাকারী’ বলে নিজ ফেসবুক টাইমলাইনে স্ট্যাটাস দিয়েছেন সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত বেগম রেকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) কর্মচারি পিএ-টু-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক খোরশেদ আলম। গত ৬ জানুয়ারি উপাচার্যের উপস্থিতির দাবিতে সিণ্ডিকেট কক্ষে উপ-উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অবরুদ্ধ করলে শিক্ষকদের নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করে স্ট্যাটাস দেন তিনি।
এ নিয়ে খোরশেদের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ এনে তদন্তপূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে আজ সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বিত সংগঠন অধিকার সুরক্ষা পরিষদ।
পরিষদের আহ্বায়ক ড. মতিউর রহমান স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত ৬ জানুয়ারি ক্যাম্পাসে উপাচার্যের উপস্থিতির দাবিতে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সরিফা সালেয়া ডিনার সাথে আমরা অধিকার সুরক্ষা পরিষদের সদস্যরা সিন্ডিকেট কক্ষে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলাম। ওই দিন দুপুরে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারি পিএ-টু-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক খোরশেদ আলম উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভিত্তিহীন, মানহানিকর, অপমানজনক, মিথ্যা তথ্যনির্ভর ফেসবুক পোস্ট তার টাইমলাইনে প্রচার করে যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী অপরাধ। ওই ফেসবুক পোস্ট কতিপয় শিক্ষক ও কর্মকর্তাও প্রচারণা চালান যা উপাচার্যের টাইমলাইনেও দেখা যায়। এসব মিথ্যা প্রচারণা চালানো অইনগতভাবে অপরাধ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক , কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের নিয়ে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত একজন কর্মচারীর এ ধরনের মানহানিকর কটুক্তিপূর্ণ অসদাচারণ আমাদের ব্যাপকভাবে আহত করেছে। অধিকার সুরক্ষা পরিষদ খোরশেদ আলমের এসব মিথ্যা, বানোয়াট ও মানহানিকর ফেসবুক পোস্টের বিষয়টি তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ অপরিহার্য বলে মনে করে।
অভিযোগে আরো বলা হয়, খোরশেদের লেখায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে এবং শিক্ষক, কর্মকতা ও কর্মচারিদের সম্মানহানি ঘটেছে । শুধু তাই নয়, এই খোরশেদ আলম গত ২৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক শিক্ষার্থীদের হকার, চাটুকর, কুলাঙ্গার, ছাত্র নামের অছাত্র, তেলবাজ, স্বার্থান্বেষী, অসৎ, লোলুপ প্রভৃতি অভিধায় আখ্যায়িত করে ফেসবুকে মানহানিকর প্রচারণা চালিয়েছে। তিনি শিক্ষার্থীদের ঝাঁটাপেটা করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়ারও হুমকি দেন। অবেক্ষাধীন থাকা একজন কর্মচারির এহেন আচরণ বারবার প্রকাশের পরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। খোরশেদ আলম যোগদানের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত রয়েছেন।
খোরশেদের বিরুদ্ধে তিন কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্তপূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানায় অধিকার সুরক্ষা পরিষদ। এই সময়ের মধ্যে খোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে অধিকার সুরক্ষা পরিষদ খোরশেদ আলমসহ তার এ অপকর্মের নির্দেশদাতা, মদদদাতা ও প্রচারণাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নেবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে সংগঠনটি।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে খোরশেদ আলমের কাছে ফোন করা হলে সাংবাদিক পরিচয় শুনে তিনি ফোন কেটে দেন। তবে, এর আগে শিক্ষার্থীদেরকে পতিতা বলার সময় তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি যা করেছি সব অফিসিয়াল প্রসিডিউর মেইনটেইন করেই করেছি। আমার ফেসবুক পোস্ট উপাচার্যের সাথে পরামর্শ করেই দিয়েছি।’
চিঠির বিষয়ে জানতে রেজিস্ট্রার এবং উপাচার্যের কাছে ফোন করা হলে তারা সাড়া দেননি। তবে উপাচার্যের একান্ত সচিব আমিনুর রহমান অধিকার সুরক্ষা পরিষদের দেওয়া চিঠি প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন, তারা রেজিস্ট্রার দপ্তরে একটি চিঠি দিয়েছেন, সেই চিঠির একটা অনুলিপি দেওয়া হয়েছে আমি সেটি উপাচার্যের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি।