বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে গুচ্ছ ভর্তিতে যেতে চায় ২১ কলেজ

১৩ শতবর্ষী কলেজের লোগো
১৩ শতবর্ষী কলেজের লোগো  © টিডিসি ফটো

দেশের ১৯টি সাধারণ ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে চায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত দেশের ২১টি শতবর্ষী ও ঐতিহ্যবাহী কলেজ। এজন্য শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রধানের সম্মতি ও দিকনির্দেশনা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ।   

আজ  মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি। আজকে সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

তিনি বলেন, শতবর্ষী সরকারি কলেজগুলোর বেশিরভাগই ঐহিত্যবাহী এবং পুরনো। এসব কলেজেও মেধাবী শিক্ষার্থী পড়াশুনা করে। তাই এসব কলেজ যেহেতু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে তাই মন্ত্রণালয়ের বিষয়টি নিয়ে চিঠি দিয়েছি। তাছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরেও (মাউশি) চিঠি দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান বরাবরও চিঠি দেয়া হলে বলে তিনি জানান।

জানা গেছে, শতবর্ষী ১৩টি কলেজের মধ্যে রয়েছে- রাজশাহী কলেজ, চট্টগ্রাম কলেজ, চট্টগ্রামের হাজী মুহম্মদ মহসিন কলেজ, নড়াইলের ভিক্টোরিয়া কলেজ, বরিশালের ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ, সিলেটের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ, পাবনার এডওয়ার্ড কলেজ, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ, খুলনার ব্রজলাল (বিএল) কলেজ, ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজ, রংপুরের কারমাইকেল কলেজ, বাগেরহাটের প্রফল­চন্দ্র (পিসি) কলেজ ও ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজ।

তবে রাজধানীর ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ শতবর্ষী হলেও এসব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত। তাই ঢাবি থেকে এসব কলেজে আলাদাভাবে ভর্তি পরীক্ষা ও শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। 

অন্যদিকে, ৮টি প্রাক-মডেল কলেজের মধ্যে রয়েছে- ঢাকা কমার্স কলেজ, সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ, লালমাটিয়া মহিলা কলেজ, লালমনিরহাটের উত্তরবাংলা কলেজ, বগুড়ায় সৈয়দ আহম্মদ কলেজ, টাঙ্গাইলে সখিপুর রেসিডেন্সিয়াল মহিলা কলেজ, কুষ্টিয়ায় দৌলতপুর কলেজ ও কিশোরগঞ্জে রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজ।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের চিঠিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভায় ১৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা গুচ্ছ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। দেশের বৃহত্তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এই প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত হওয়ার প্রয়োজন অনুভব করছে। প্রাথমিকভাবে এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ১৩টি শতবর্ষী কলেজ এবং আটটি প্রাক-মডেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা ১৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমন্বিতভাবে গুচ্ছ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি। 

এতে আরও বলা হয়েছে, সমন্বিত প্রক্রিয়ায় ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে গত বছর রাজশাহী কলেজে অনুষ্ঠিত ১৩টি শতবর্ষী কলেজের শিক্ষার মানোন্নয়ন বিষয়ক কর্মশালায় শিক্ষামন্ত্রীর উপস্থিতিতে আলোচনা হয়েছিল। এটি উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে সুফলদায়ক হবে বলে সকলেই তথন ঐকমত্য প্রকাশ করেন। কোভিড-১৯ জনিত পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ করে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠান করার কথা আমরা ভাবছি। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সম্মতি ও দিকনির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

শিক্ষা উপমন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালককে চিঠির অনুলিপি দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় সেই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে এবং ১৯ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় যদি সেখানে যুক্ত হতে চায় তাদেরও স্বাগত জানাতে আমাদের আপত্তি থাকার কথা নয়। তারা ইউজিসির সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলুক, মন্ত্রণালয়ের কিছু করণীয় থাকলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।


সর্বশেষ সংবাদ