জবিতে ‘মানবাধিকার ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক ওয়েবিনার
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের উদ্যোগে মানবাধিকার দিবস-২০২০ উপলক্ষে “মানবাধিকার ও বাংলাদেশ”শীর্ষক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (১৩ ডিসেম্বর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের উদ্যোগে এই ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়।
ওয়েবিনার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, ‘‘মানবাধিকার বলতে আমরা সাধারণ অর্থে বুঝি, মানুষের সে সকল অধিকার ও স্বাধীনতাকে যে অধিকারগুলো নারী, পুরুষ, শ্রেণী, ভাষা, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে যে কোনো মানুষ তার জন্য জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সমানভাবে উপভোগ করতে পারে। যে অধিকারগুলো থেকে কাউকে বঞ্চিত করার কোনো সুযোগ থাকবে না। শুধুমাত্র সেগুলো ব্যক্তিগত ও জাতীয় সুরক্ষার স্বার্থে সীমাবদ্ধ করা যেতে পারে। যে কোনো পরিবর্তন আসে বিপ্লবের মাধ্যমে, যেমনিভাবে মানবাধিকারের বিষয়ে বিশ্বব্যাপী জাগরণ তৈরি হয়েছিল ফরাসি বিপ্লবের পর। বাংলাদেশে মানবাধিকার সুরক্ষার জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন মনোজগতের বৈপ্লবিক পরিবর্তন। একই সাথে যে সকল টার্গেট পিপলদের জন্য মূলত বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয় তাদের পর্যন্ত অধিকারের বিষয়টি পৌঁছানো দরকার। বিভিন্ন উপজাতির সুবিধা অসুবিধা নিয়ে রিসার্চ করে ব্যক্তিগত উৎকর্ষতা সাধন থেকে তাদের অধিকার আদায়ে মূখ্য ভূমিকা পালন করলে তবেই মানবাধিকার সুরক্ষিত হবে।’’
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তৃতায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন বলেন, সার্বজনীন মানবাধিকার সনদে স্বাক্ষরিত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এই সনদের অধিভুক্ত ধারাগুলোর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আসছে। শুধু তাই নয়, মানবাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের সংবিধান প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সেটি সংবিধানের তৃতীয় অধ্যায়ের (২৬-৪৭ক) নং অনুচ্ছেদে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে বলে জানান তিনি।
আখতার হোসেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ও সুশীল সমাজ দেশের মানুষের অধিকার রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে হয়তো আমরা বেশ সফলও হয়েছি এবং ক্রমাগত সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্য বিভাগীয় চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. আসমা বিনতে ইকবাল মানবাধিকারের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। প্রাচীন সভ্যতাসমূহে তথা গ্রিক সভ্যতা, মেসোপটেমীয় সভ্যতা, মিসরীয় সভ্যতা, ব্যবিলনীয় সভ্যতার ধারাবাহিকতায় বর্তমান সময়ের পরিক্রমা তুলে ধরে বাংলাদেশের মানবাধিকারের কার্যবিধি আলোকপাত করেন তিনি।
লোক প্রশাসন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আছমা বিনতে ইকবাল-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমেদ ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. এস এম আনোয়ারা বেগম।
লোক প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুমান মাহফুজের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় লোক প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মফিজুর রহমান এবং ওয়েবিনারে মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন লোক প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শামীমা আক্তার।