অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা বাতিল চায় ছাত্র ফ্রন্ট
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২০, ১০:৩৪ AM , আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২০, ১০:৩৪ AM
সফটওয়্যার ব্যবহার করে অনলাইনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের নীতিগত সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। একইসাথে বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের এ সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখান করেছে ছাত্র সংগঠনটি।
সোমবার (১৯ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ভার্চুয়াল মাধ্যমে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।
ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাসুদ রানা ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘আমাদের দেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় সেখানে একদিনে দু’তিন ঘণ্টার একটা পরীক্ষায় মেধার মূল্যায়ন করা সম্ভব হয় না। ফলে অবস্থিত কাঠামোর মধ্যেই বৈষম্য বিদ্যমান। এখন এই পরীক্ষা অনলাইনে অনুষ্ঠিত হলে প্রকৃত মেধা যাচাইয়ের সম্ভাবনা একেবারে তলায় গিয়ে ঠেকবে। কারণ সাম্প্রতিক অনলাইন ক্লাস নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা সুখের নয়। শতকরা ৫ শতাংশও শিক্ষার্থীও স্বাভাবিকভাবে ক্লাস করতে পারেনি। এই অভিজ্ঞতার পর ক্লাস নিয়েই নতুন করে ভাববার দরকার ছিল। সেটা না করে ভর্তি পরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া বৈষম্যকে আরও বাড়াবে এবং মেধার মূল্যায়নের সম্ভাবনা আরও কমবে।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ভর্তি পরীক্ষা আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি পরীক্ষা। এসএসসি ও এইচএসসির ফলের সফলতা-ব্যর্থতা যাচাই হয় এ পরীক্ষার ফলে। সেটা পুরোপুরি একটা সঠিক প্রক্রিয়া নয় তা ঠিক, কিন্তু এটাই আমাদের দেশে অনেকদিন ধরে চলে এসেছে। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ কর্মজীবনও এই পরীক্ষার উপর অনেকটা নির্ভর করে। অনলাইন ক্লাস যেখানে পরীক্ষামূলক পর্যায়েই ব্যর্থ, সেখানে নানারকম ত্রুটি ও বৈষম্যের সুযোগ বজায় রেখে ভর্তি পরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার ক্ষেত্রে অনলাইন পদ্ধতিতে চলে যাওয়া কোনো বিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত বলে আমাদের মনে হয় না। ভর্তি পরীক্ষার অনলাইন ফরম বিক্রি করে বিরাট অংকের টাকা আদায় করা ছাড়া এ থেকে আর কোনো অর্জনের দিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই।
বিবৃতিতে ছাত্র নেতারা বলেন, এর আগে এইচএসসি পরীক্ষা না নেয়ার সিদ্ধান্তও বিবেচনাপ্রসূত ছিল না। আমরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার কথা বলেছিলাম। এটা অসম্ভব কোনো ব্যাপার ছিল না। আমরা একইভাবে কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়িয়ে, শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার পক্ষপাতী। এটি সকল বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বিতভাবে নিতে পারে, সবগুলো জেলায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যাভেদে সেন্টারের সংখ্যা ঠিক করা যেতে পারে। সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখন ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ। ফলে একটা পরিকল্পনা করে এই পরীক্ষা নেয়া অসম্ভব কিছু নয়। বিশ্বের অনেক দেশে এভাবে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে, তাদের কাছ থেকে আমাদের শিক্ষা নেয়া উচিৎ।
বিবৃতিতে ছাত্রফ্রন্ট নেতারা আরও বলেন, আমরা শিক্ষার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোনো পর্যালোচনা ও মতামত গ্রহণ ব্যতিরেকে একের পর এক সরকারের এই প্রকার কাণ্ডজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রতিবাদ জানাই। একইসাথে ভর্তি পরীক্ষা অনলাইনে নেয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানাই।’’