জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই অধ্যাপকসহ ৩ জন বরখাস্ত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অশালীন ও চরম আপত্তিজনক মন্তব্য করায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপককে বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া ‘দায়িত্ব পালনে অবহেলা’, ‘অসদাচরণ’ এবং ‘নৈতিক স্খলন’ জনিত কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে এক অধ্যাপক ও এক কর্মকর্তাকেও বরখাস্ত করা হয়েছে।
সম্প্রতি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের বরখাস্ত করা হয়। গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত পৃথক পৃথক নোটিসে তাদের বরখাস্তের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
তারা হচ্ছেন- ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান, মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শামসুদ্দীন ইলিয়াস এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান।
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবার সদস্যদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অশালীন ও চরম আপত্তিজনক মন্তব্য করায় প্রথমে অধ্যাপক এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত ও তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২ সেপ্টেম্বরের সিন্ডিকেট বৈঠকে তাকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও পরামর্শ দফতরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফয়জুল করিম বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান সম্প্রতি ফেসবুকে অশালীন ও আপত্তিজনক মন্তব্য করেন। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত, ঢাকায় মামলা দায়ের করেন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ওয়াহিদুজ্জামান আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানান। কিন্তু, আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান। চাকুরিবিধি অনুযায়ী কারাগারে সোপর্দ হওয়ার দিন হতে সহকারী অধ্যাপক এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামানকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকে তিনি পলাতক থাকেন।
তিনি আরও জানান, তদন্ত প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপ অনুসরণ শেষে গত ২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ২০৯তম সভায় শিক্ষক এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামানকে চাকরি হতে বরখাস্ত করা হয়।
একইদিনে ওয়েবসাইটে প্রকাশিত অপর বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শামসুদ্দীন ইলিয়াসকেও সিন্ডিকেট বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ‘দায়িত্ব পালনে অবহেলা’, ‘অসদাচরণ’ এবং ‘নৈতিক স্খলন’ জনিত কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমানকেও সিন্ডিকেট বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ‘দায়িত্ব পালনে অবহেলা’, ‘অসদাচরণ’, ‘পলায়ন’ এবং ‘প্রতারণা’র দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।